Jump to ratings and reviews
Rate this book

আর কোনোখানে

Rate this book

196 pages, Hardcover

First published February 1, 1968

7 people are currently reading
257 people want to read

About the author

Leela Majumdar

111 books106 followers
Leela Majumdar (Bengali: লীলা মজুমদার Lila Mojumdar) was a Bengali writer. Her first story, Lakkhi chhele, was published in Sandesh in 1922. It was also illustrated by her. The children's magazine in Bengali was founded by her uncle, Upendrakishore Ray Chaudhuri in 1913 and was later edited by her cousin Sukumar Ray for sometime after the death of Upendrakishore in 1915. Together with her nephew Satyajit Ray and her cousin Nalini Das, she edited and wrote for Sandesh throughout her active writing life. Until 1994 she played an active role in the publication of the magazine.

Creative efforts :
An incomplete bibliography lists 125 books including a collection of short stories, five books under joint authorship, 9 translated books and 19 edited books.
Her first published book was Boddi Nather Bari (1939) but her second compilation Din Dupure (1948) brought her considerable fame From the 1950s, her incomparable children's classics followed. Although humour was her forte, she also wrote detective stories, ghost stories and fantasies.

Her autobiographical sketch 'Pakdandi' provides an insight into her childhood days in Shillong and also her early years at Santiniketan and with All India Radio.
Apart from her glittering array of children's literature, she wrote a cookbook, novels for adults (Sreemoti, Cheena Lanthan), and a biography of Rabindranath Tagore. She lectured on Abanindranath Tagore and translated his writings on art into English. She translated Jonathan Swift's Gulliver's Travels and Ernest Hemingway's The Old Man and the Sea into Bengali.
Satyajit Ray had thought of filming Podi Pishir Bormi Baksho. Arundhati Devi made it into a film in 1972. Chhaya Devi played the role of the young hero, Khoka's famed aunt Podipishi.

Awards :
Holde Pakhir Palok won the state award for children's literature, Bak Badh Pala the Sangeet Natak Akademi Award, Aar Konokhane Rabindra Puraskar. She had also won the Suresh Smriti Puraskar, Vidyasagar Puraskar, Bhubaneswari Medal for lifetime achievement, and Ananda Puraskar.
She has been awarded the Deshikottama by Visva Bharati, and honorary D.Litt. by Burdwan, North Bengal and Calcutta Universities.

Ratings & Reviews

What do you think?
Rate this book

Friends & Following

Create a free account to discover what your friends think of this book!

Community Reviews

5 stars
47 (57%)
4 stars
24 (29%)
3 stars
10 (12%)
2 stars
0 (0%)
1 star
1 (1%)
Displaying 1 - 28 of 28 reviews
Profile Image for Israt Zaman Disha.
194 reviews621 followers
January 9, 2021
আর কোনোখানে দিয়ে লীলা মজুমদারের সাথে পরিচিত হলাম। কম বেশি সকলেই ওনার কথা জানি, ওনার লেখার সাথে পরিচিত। তাই বেশি কিছু বলার নেই। শুধু বলতে চাই, বড় হওয়ার হাজার অশান্তির মাঝে একটুখানি শান্তি যদি দিতে পারে কোন বই, সেই তো অনেক।
Profile Image for Harun Ahmed.
1,646 reviews417 followers
May 1, 2023
" মাসির মেয়ে মাসে মাসে পেত এক টাকা করে। কিন্তু মাসি বলেন খাওয়া-দাওয়ায় মেয়ের রুচি নেই, সে নাকি বড্ড একা! শুনে আমরা আশ্চর্য হয়ে গেলাম, একা আবার কাকে বলে? আমাদের বাড়িতে কারো একা হবার জো নেই। অভিমান করবার জো নেই, অমনি আর পাঁচজন তাকে জোর করে টেনে বের করে আনত, কি হল, কে কি বলল, তারো পত্রপাঠ একটা ব্যবস্থা করে ফেলা হত, রাগ দুঃখ মনখারাপের কোনো জায়গাই রাখা হত না।"



"আর কোনোখানে" লীলা মজুমদারের বেড়ে ওঠার গল্প। তিনি ছিলেন সুবিখ্যাত রায় পরিবারের সন্তান। শিলং এর পাহাড়ে কাটানো অপরূপ ছোটবেলা, রায়বাড়িতে বিদগ্ধ প্রিয় মানুষদের সান্নিধ্য, সুকুমার রায়ের মৃত্যু, নিজের পড়ালেখা, বাবার সাথে স্নায়ুযুদ্ধ, শান্তিনিকেতনে চাকরি, সবকিছু ছাপিয়ে পৃথিবীতে নিজের একটা স্থান খুঁজে পাওয়ার নিরন্তর প্রচেষ্টার গল্প "আর কোনোখানে।" আগেই "পাকদণ্ডী " পড়ে ফেলায় গল্পে তেমন নতুন কিছু পেলাম না। কিন্তু পাকদণ্ডীর বর্ণনার বাহুল্য ও একঘেয়েমি এ বইতে নেই। এ স্মৃতিগদ্য পুরোটাই অত্যন্ত স্বাদু। লেখিকার সারল্য, অকপট স্বীকারোক্তি, সাহেবের অলস বেড়ালের গল্প, মিশনারী স্কুলে অপদস্থ হওয়া, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, নিজের পরিবারের দ্বান্দ্বিক অবস্থান, শান্তিনিকেতনে অম্লমধুর দিনযাপন ও সেখানকার প্রকৃত অবস্থা রাখঢাক না রেখে প্রকাশ - সবই পড়তে ভালো লেগেছে। আগে জানলে শুধু "আর কোনোখানে"ই পড়তাম, "পাকদণ্ডী" পড়ে শেষদিকে রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠেছিলাম।
Profile Image for Daina Chakma.
440 reviews771 followers
October 5, 2019
হেথা নয়, হেথা নয়, অনয কোথা, আর কোনোখানে!

আমিও আর কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিলাম, অন্য এক ভুবনে, অন্য এক সময়ে!
Profile Image for Onu Tareq.
29 reviews208 followers
Read
June 29, 2022
লীলা মজুমদারের আত্মজীবনী ‘পাকদন্ডী’ পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম, তখনো জানতাম না শক্তিমান এই লেখকের ‘আর কোনোখানে’ নামে পরের দিকে লেখা আরেকটি আত্মজীবনীমূলক বইও আছে, গেলবছর কলকাতায় পেয়েছিলাম ‘মিত্র ও ঘোষ’ থেকে প্রকাশিত সুখপাঠ্য বইখানা।

শুরুর দিকেই তাঁর বিখ্যাত বাবা ‘বনের খবর’ খ্যাত প্রমদারঞ্জন চৌধুরীর চাকুরির সুবাদে তাদের মেঘালয়ের কোলে বেড়ে ওঠা।

‘বেজায় বৃষ্টি পড়ত ঐ পাহাড়ে দেশে; শুনতাম মাত্র বত্রিশ মাইল দূরে ছোট একটি জায়গায় পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশী বৃষ্টি পড়ে। শুনে ভারি একটা গর্ব মনে হত। বছরের পাঁচ মাস বৃষ্টি পড়ত বটে, কিন্তু কোথাও এক ফোঁটা জল দাঁড়াত না, পাহাড়ের গা বেয়ে পুরনো নদীকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে, হাজার হাজার নতুন ছোট নদী তৈরি করে, সে জল নিচের উপত্যকায় নেমে যেত।‘

সেই দূর দেশের অপরূপ বর্ণনা, সেখানের মিশনারি স্কুল, ইংরেজ ক্লাসমেটদের কাছে পদে পদে ছোট হওয়া, মাঝে মাঝে দাদাবাড়ি কিশোরগঞ্জের মশুয়া গ্রামের কথা, ফিরিঙ্গিদের গল্প, আর শৈশবময় বিখ্যাত সব লোকদের আনাগোনা পরমাত্মীয় উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী সহ। সারা বইতে ঘুরে ফিরে এসেছে লেখকের প্রিয় বড় দাদা সুকুমার রায়ের কথা, যার উৎসাহেই প্রথম ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় লিখেছিলেন কিশোরী লীলা।

বড়ই আরাম লাগছিল সেই নিসর্গ ঘেরা শৈশবের গল্প অপূর্ব ঠাসবুনটের ভাষায় পড়তে। এরপর কোলকাতার জীবনে, শিক্ষা, ও পরে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে তিনি শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন শান্তিনিকেতনে। সেখানের অভিজ্ঞতা এর আগের বইতে খুব বেশী ছিল বলে মনে পড়ছে না, যা এখানে আছে।

প্রায় ৫০ বছর আগে বইটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল, জানেন তো যে লীলা মজুমদার ঠিক ১০০ বছর বেঁচে ছিলেন, ২০০৭ সালে উনার চিরপ্রস্থান ঘটে। বইটার শুরুটা যেমন স্বচ্ছতোয়া পাহাড়ি নদীর মত বেগবান ছিল, পরে সেই ধারাটা অব্যাহত ছিল না, অত্যন্ত ভাষার জাদু কিছুটা অন্যরকম হয়ে গেল বলে মনে হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বই।

‘যেই বনের মধ্যে ঢুকলাম অমনি চারদিক ছায়াময় হয়ে উঠল। বাইরের শব্দ সেখানে পৌঁছয় না, শুধু ঝোপের আড়ালে নিরন্তর ঝি ঝি পোকার ডাক, ঝির-ঝির জল পড়ার শব্দ আর পাইন বনের মধ্যে বাতাসের দীর্ঘশ্বাস। পাখিরা বাসায় ফিরছে, তাদের খানিক ডাকাডাকি আর ডানা ঝাপটানি। এখানকার সঙ্গে চেনা পৃথিবীর সাদৃশ্য নেই। এখানে সব রং মিলে গিয়ে অপূর্ব শ্যামল রূপ ধরেছে। কত রকম সবুজ, দিনের আলো যেটুকু পৌঁছাচ্ছে সেও সবুজ; সরলগাছের গায়ে ছাই মেশানো সবুজ পরগাছা ঝুলছে, তাদের ‘লাইকেন’ বলে, কত রকম চেহারা তাদের, হাত দিলে শক্ত কর্কশ। হঠাৎ নাকে আসে অপূর্ব সৌরভ, চারদিক চেয়ে দেখি, উঁচু ডালে অর্কিডের ফুল ফুটেছে। মোটা মোটা রসালো শিকড় বাতাসে মেলে ধরা, কোথাও সোনালী ফুলের ছড়া, তাদের বুকের ভেতরটা গাঢ় লাল, কোথাও যেন মোমের তৈরি সাদা ফুলে বেগনির ছটা। -- আপনা থেকেই আমাদের গলার স্বর নিচু হয়ে আসে, এখানে উঁচু গলায় কথা বলতে ইচ্ছা করে না।‘
Profile Image for Shadin Pranto.
1,469 reviews560 followers
September 29, 2019
' হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, আর কোনোখানে' - রবীন্দ্রনাথ

রায় বাড়ির কন্যা উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ভাতিজি, সুকুমার রায়ের বোন, সত্যজিৎ রায়ের ফুফু কিংবা 'বনের খবর'এর প্রমদারঞ্জন রায়ের মেয়ে লীলা রায়। অথবা এসকল পরিচয়ের ঊর্ধ্বে নিজস্ব লেখনী মহিমায় যিনি সাহিত্য জগতে নিজের আসনটি স্থায়ী করে রেখেছেন, তিনিই হলেন লীলা মজুমদার। এই নাতিদীর্ঘ গ্রন্থটি তাঁরই স্মৃতিকথা৷ নিজের প্রথম পঁচিশ বছরকে মলাটবদ্ধ করেছেন 'আর কোনোখানে ' শিরোনামে।

পিতার চাকরির সুবাদে শৈলবাসে বেড়ে উঠেছেন এগারো বছর পর্যন্ত। পাহাড়ের জীবনকে এতটা চিত্রময়রূপ ভঙিতে সাজিয়েছেন লীলা মজুমদার যেন সবকিছু দু'চোখের সামনে দেখছিলাম। সেখানকার ঝঞ্জাটহীন সময়কে বেশ করে স্মৃতিরপটে এঁকেছেন লীলা মজুমদার৷

উপেন রায় আ্যন্ড সন্সের বিখ্যাত প্রেস, সুকুমার রায়ের মোহনীয় ব্যক্তিত্ব, রায় পরিবারের প্রত্যেকটি পুরুষের কীর্তির বর্ণনা সবই আছে। আছে তুখোড় মেধাবী লীলা মজুমদারের পরিবারের কলকাতায় চলে আসা। বিরাট রায় পরিবারে একেরপর এক ট্র্যাজেডি। আফসোস করেছেন তার ভাই সুকুমার রায়ের মতো মানুষকে আজ লোকে ভুলতে বসেছে। সুকুমার রায়ের পরিচয় হয়ে উঠেছে সত্যজিৎ রায়ের পিতা হিসেবে৷ অথচ সুকুমার রায় নিজে তো কম বড় রত্ন ছিলেন না। সে তো লীলা রায় তার বড়দা' সুকুমার রায়কে নিজের চোখেই দেখেছে।

শান্তিনিকেতনে নয়মাস শিক্ষকতা করিয়েছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তখনো জীবিত৷ রবিঠাকুরের সান্নিধ্য প্রাপ্তি এবং শান্তিনিকেতনবাসের অতীতকে আঁকড়ে রেখেছেন বড় যত্ন নিয়ে। যদিও টিকতে পারেন নি সেখানে। চলে আসতে হয়েছে তাঁকে।

সব অতীত অভিজ্ঞতাকে আমরা কী মনের মণিকোঠায় ঠা���ই দিই? ততস্থান তো আমাদের নেই। যেসব ঘটনা অমলিন হয়ে থেকে যায়, সেইসবই স্মৃতি হয়ে রয়ে যায়। হয়ে থাকে নিত্যকার সঙ্গী। লীলা মজুমদার তার স্মৃতিকে খুবই সাদামাটা অথচ ভারি অন্তরঙ্গতার সাথে ভাগ করে নিয়েছেন পাঠকদের সাথে এমনটি বড় একটা দেখা যায় না৷

জীবনের প্রথম পঁচিশ বছর সংখ্যা হিসেবে কতটা কম-বেশি জানি না। তবে ঘটনাবহুল পঁচিশ বললে অত্যুক্তি হবে না৷ জীবনের সকল অভিজ্ঞতা অম্লত্বে বিলীন হয় না। আবার পুরো দু'যুগ মধুরসব স্মৃতিতে টইটম্বুর হবে এমনটিও মানবজীবনের স্বভাবধর্ম নয়৷ অম্ল-মধুর স্মৃতি নিয়েই জীবন। অথচ লীলা রায় এমন কোনো ঘটনা কিংবা স্মৃতি ঘুণাক্ষরেও আনেন নি যাতে তার 'ইমেজ' নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। লীলা মজুমদারের স্মৃতিকথা ' আর কোনোখানে' খুবই সুপাঠ্য। তবে সত্যতার মাপকাঠিতে ফেলটুস।
Profile Image for Adham Alif.
334 reviews79 followers
October 26, 2023
আম্মার অসুস্থতা হেতু তখন হাসপাতালে ছুটোছুটি করেই দিন কাটে। হাসপাতালের পরিবেশ সবসময়ই আমার কেমন জানি গুমোট লাগে। সময় কাটতেই চায়না। করিডোরে বসে গুমোট সময় থেকে পরিত্রাণের জন্য ফোনে থাকা বইয়ের pdf ও epub ঘাটাঘাটি করছিলাম। হঠাৎ মনে হলো লীলা মজুমদারের স্মৃতিকথায় ডুব দেয়া যাক। পড়ব পড়ব করেও পড়া হচ্ছেনা এমন তালিকাতেই বহুদিন বইটা পড়ে আছে। হাসপাতালের সেই চঞ্চল পরিবেশেই শুরু করলাম পড়া। 


স্মৃতিকথায় আড়ালে প্রায় এক শতক পিছিয়ে গেলাম। নিজের ছোটবেলার গল্পে বলেছেন পাহাড়ী এক অঞ্চল ও জনপদের কথা। ভারতের শিলং শহর, আমাদের সিলেটের বেশ কাছেই যার অবস্থান। লীলা মজুমদার তার চিরাচরিত সাবলীল ভঙ্গিমাতেই বর্ণনা করে গেছেন তাদের স্কুল, সহপাঠী ও প্রতিবেশীদের কথা। তাদের নিয়ে ভালো-মন্দ উভয় স্মৃতিই উঠে এসেছে। মাঝেমধ্যে নিজের রায় পরিবারের মানুষ ও তাদের বহু গল্প এসেছে প্রসঙ্গক্রমে। স্বদেশী আন্দোলনের ছোটোখাটো বিভিন্ন ঘটনাবলী উত্তাল সে সময়টার কথা মনে করিয়ে দেয় বারবার। 


শিলং ছেড়ে কলকাতায় আসার ঘটনাটা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। নতুন পরিবেশ, নতুন সহপাঠীদের গল্প কিছুটা দ্রুততায় টেনেছেন। হয়তো তারা ততোটা মনে দাগ কাটেনি যতোটা কেটেছিল পাহাড়ী অঞ্চলে। শিক্ষাজীবন শেষে চাকুরীক্ষেত্রের অভিজ্ঞতার গল্প আছে। রয়েছে শান্তিনিকেতন এর কথাও। তবে সে সময়কার দুঃখ ও অস্থিরতাকে যতোটা সাধারণভাবে উপস্থাপন করেছেন তাতে কিছুটা অবাকই হয়েছি। বয়সের সাথে সাথে কি ওসব অনুভূতির সাথে সয়ে যায় মানুষ? 


"আর কোনোখানে" লীলা মজুমদারের প্রারম্ভিক জীবনের গল্প। যেখানে যুবতী বয়স পর্যন্ত ঘটনা থাকলেও প্রাধান্য পেয়েছে তার শৈশব ও কৈশোরকালের স্মৃতিরা। ঠিক চমকে দেবার মতো ঘটনাবলী না থাকলেও লেখনশৈলীর গুণে পড়ে ফেলা যায় বেশ আরামেই।
Profile Image for মোহতাসিম সিফাত.
180 reviews50 followers
April 11, 2025
লীলা মজুমদার এই বইতে খুবই সুন্দর বর্ণনায় নিজের জীবনের একটা বড়ো অংশের চুম্বক কাহিনীর পসরা সাজিয়েছেন। বাবা প্রমদারঞ্জনের সরকারি চাকুরীর সুবাদে শিলং-এ কাটে তাঁর ছেলেবেলা, বেড়ে ওঠা। নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের পাহাড়ি প্রকৃতি ও বিদেশী-এংলো ইন্ডিয়ান-বাঙালি-আদিবাসী সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির মাঝে বেড়ে ওঠা শৈশবের মায়াভরা সব গল্প বলেছেন লেখিকা। বর্ণনা খুবই জীবন্ত, যেনো চোখের সামনে বিখ্যাত রায় পরিবারের খন্ডচিত্র দেখছি বায়স্কোপে। পাহাড়ি জীবনের মাঝে মা বাবার কথায় ও আত্মীয় স্বজন বেড়াতে আসলে তাঁদের গল্পে কলকাতা নিয়ে রোমান্টিকতা বা ফ্যান্টাসিতে বিভোর হয়েই একদিন বাবার বদলীর কল্যাণে পরিবার সমেত কলকাতায় আসেন। বড়চাচা উপেন্দ্রকিশোর, এরপর চাচাতো ভাই সুকুমার রায়ের সাথের কাহিনীগুলো খুবই সুন্দর। সন্দেশ প্রকাশের দিনগুলি, পারিবারিক আড্ডায় বিভিন্ন গুণীজনের সমাগম, এসবের মাঝে ভাইবোনদের নিয়ে বেড়ে ওঠা। আস্তে আস্তে বোর্ডিং স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে আবার পাহাড়ে যান পড়াতে। এরপর রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে শান্তিনিকেতনে আসেন। শান্তিনিকেতনের তিরিশ বছর পার হয়েছে, শুরুর দিকের চিন্তকদের ক্রেজ কমেছে, সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থার সাথে সাংঘর্ষিক শিক্ষাপদ্ধতির কারণে হাঁপিয়ে উঠছে পরিচালকরা, এসবের মাঝে লেখিকার কথায় প্রাণবন্ত কিছু বর্ণনা আছে ব্যতিক্রমী শিক্ষাদানের। প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত, স্বাধীন, তবুও শিষ্টাচারের মধ্যে ছাত্রদের বেড়ে ওঠার গল্পগুলো আশ্চর্য রকমের। এরপর মনের সায় না পেয়ে সে চাকরি ছাড়েন। আশুতোষ কলেজে অধ্যাপনা করলেন এক বছরের জন্যে। মোটামুটি টাইম ফ্রেম এতটুকুই।

এইসব সুখপাঠ্য কাহিনীর বয়নে লীলা মজুমদার এই আত্মকথা সাজিয়েছেন, ফাঁকে ফাঁকে তার জীবন দর্শন আর চিন্তার আবহ নিয়ে এসেছেন। একটা গুণী ও সাংস্কৃতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত পরিবারে বেড়ে ওঠার এ এক আদরমাখা কাহিনী।
Profile Image for Nowrin Samrina Lily.
157 reviews15 followers
December 29, 2021
ইশ যদি বছরটা এই সুন্দর, মিষ্টি বইটা দিয়ে শেষ করতে পারতাম!!! এতো মন ভালো করে দেওয়ার মতো বই একটা। অসুস্থ ছিলাম এই দুইদিন,কিন্তু বইটা যেনো সব দুর্বলতা এক মুহুর্তে শেষ করে দিল।
সৌমেন দাদা,একটা আফসোস রয়েই গেল যে বইটা অনেক দেরীতে পড়লাম।☹️তবুও ধন্যবাদ তোমাকে এই বইটা আমাকে পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
আমার পড়া সবচেয়ে সুন্দর আত্মজীবনী 💜
Profile Image for Rifat.
501 reviews329 followers
October 27, 2020
মানুষের মনে একটা বড় জায়গা জুড়ে থাকে শৈশব কালের স্মৃতি। ধীরে ধীরে মানুষ বড় হয়, জীবনের খাতায় যোগ হতে থাকে বিভিন্ন অভিজ্ঞতা। আর সেসব কথাই লেখিকা লীলা মজুমদার এই বইটাতে বলে গেছেন সুনিপুণ ভাবে, পড়ার সময় মনে হয় যেন এই তো চোখের সামনেই লেখিকা ধীরে ধীরে একেকটি ধাপ পাড়ি দিচ্ছেন।শিলং এর সবুজে ঘেরা পরিবেশে শৈশব কাটিয়ে কলকাতায় প্রস্থান, পড়াশোনা শেষ করে শান্তিনিকেতনে যাত্রা; সবকিছুর বর্ণনা ছিল সুখপাঠ্য।

বইয়ের এই লাইনটা মনে গেঁথে গেছে,"আমার মাসতুতো বোন নোটন ছিল সেই রকম জাত-সুন্দরী। কিন্তু এখন আর একটুও হিংসা হত না,অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। হিংসা হয় সমানে সমানে,নিদেন যেটাকে আয়ত্তের মধ্যে বলে মনে হয় তাই নিয়ে; নাগালের বাইরে যা, তাই দেখে বিস্ময় হয়, ঈর্ষা হয় না।"

লেখিকা এত্ত গুণী মানুষের সান্নিধ্য পেয়েছেন!!!! আমার মাথা একদম ঘুরে গেছে -_-
শিলং এর পাহাড়-ঝর্ণার চঞ্চল সৌন্দর্য দেখে বড় হওয়া লেখিকার মন ছিল বড় বিক্ষিপ্ত।কিছুতেই যেন স্থিরতা আসছিল না।
এই যে মন খালি বলে এখানে না, ওখানেও না, হয়তো আর কোনোখানে শান্তি মিলবে তার সমাধানটাই বা কি?
সমাধান!?
একটি চীনা প্রবাদ,"নিভৃত হৃদয়ে একটি সবুজ গাছের ডাল পুঁতে দাও; গানের পাখি নিজেই আসবে ।"
Profile Image for Mahrufa Mery.
201 reviews115 followers
December 18, 2025
হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, আর কোনোখানে থেকে বইয়ের নাম আর কোনখানে। ক’বছর আগে শুধু বইয়ের রিভিউ ঘাটতাম, এই ঘাটাঘাটি করতে গিয়েই জানলাম লীলা মজুমদার (বাপের বাড়ির সূত্রে লিলা রায় – সত্যজিৎ রায়ের পিসি, সুকুমার রায়ের কাজিন) এর আত্মজীবনিমূলক বই আসলে ৩ টা – আর কোনখানে, পাকদন্ডী আর খেরোরখাতা। এর আগে তার বাবা লেখক প্রমদারঞ্জন চৌধুরীর বিখ্যাত বই - ‘বনের খবর’ পড়া ছিল, পরিচয় কানেক্ট করতে পেরে আরো উজ্জিবীত হলাম। জানলাম তার চাকুরির সুবাদে লীলা রায়ের মেঘালয়ের কোলে বেড়ে ওঠা। আরো রিলেভেন্ট হল, আমার মেঘালয় এবং শিলং ভ্রমণ হয়েছে এবং এ জায়গা সম্পর্কে মুগ্ধতা আছে।

তাই পড়া শুরু করলাম আর কোনখানে দিয়েই। এটি মূলত অসম্পূর্ণ আত্মজীবনি। ছোটবেলা থেকে যৌবনকালে বিয়ের আগ পর্যন��ত। শিলং থেকে কলকাতা হয়ে দার্জিলিং হয়ে শান্তিনিকেতন এবং ফের কলকাতা পর্যন্ত। আত্মজীবনির মজা হল এতে সময় ধরা পরে। লীলা মজুমদার ২০০৭ সালে ১০০ বছর বয়সে মারা যান। তিনি যখন তার ছেলেবেলার কথা বলছেন, আমার কাছে তা প্রায় ১০০ বছরের বেশি সময়ের আগের কাহিনী, পাহাড়ি জীবনের অপরূপ বর্ণনা, ইনগ্রেজ শাসন, স্বদেশী আন্দোলনের গার্হস্থ্য প্রভাব, মিশনারি স্কুল, সিলেট, কুমিল্লার উল্লেখ আর শৈশবের সাহচর্য বিখ্যাত সব লোকদের গল্প। সারা বইতে বার বার প্রসঙ্গ টেনেছেন লেখকের প্রিয় বড় দাদা সুকুমার রায় ও রায় পরিবারের কথা, যার উৎসাহে ‘সন্দেশ’ পত্রিকায় লেখা শুরু করেন কিশোরী লীলা রায়। রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে শান্তিনিকেতনে পড়িয়েছিলেন, আছে শান্তিনিকেতনের গল্প, সেখানেও হারিয়েছি কারণ যাওয়া হয়েছে শান্তিনিকেতনে। সেই পুরোনো শান্তিনিকেতনের সাথে আমার দেখার মিল খুব সামান্যই পেয়েছি বটে তবে শিল্পীদের নাম কিছু পরিচিত ছিল বিধায় সেও মিললো আর কোপাই নদী আর লাল মাটির তীর খোয়াই… আহা যদি প্রতিবছর যাওয়া যেত!

একটা আরাম আরাম , শান্তি শান্তি বই এটা, কেমন যেন ইনোসেন্ট/নিষ্পাপ সৌন্দর্য্য ধরা পরেছে তার পাহাড়ী জীবনের বর্ণনায়। শিশুর চোখে দেখা ও শিশুমনের উপলব্ধী এত সুন্দর করে লিখে ফুটিয়ে তুলেছেন যে – মনে হয় আমি যেন তার সেই জীবন চক্ষু মুদলেই দেখতে পাচ্ছি। শীত লাগছে, আরাম লাগছে, বৃষ্টির শব্দ শুনতে পাচ্ছি যেন।

হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, আর কোনোখানে লাইন থেকেই বইয়ের নামটি এসেছে, আমিও হারিয়েছি, বারে বারে, বই পড়তে পড়তে… শিশু, কিশোরী, তরুনী লীলা রায়ের সাথে সাথে… আর কোনখানে।

২০২৫ এ পড়া অন্যতম সেরা বই, আর কোনখানে।
Profile Image for Md Shariful Islam.
258 reviews84 followers
June 1, 2021
আত্মজীবনী আমার বরাবরই প্রিয়। নিজের সম্পর্কে বলার সময় মানুষ বাড়িয়ে বলতেই পারে বা কিছু লুকাতেই পারে তবু কোনো ব্যক্তি, তাঁর চিন্তাধারা, তাঁর জীবনদর্শন জানতে অন্যের লেখা জীবনীর চেয়ে সেই ব্যক্তির নিজে লেখা আত্মজীবনী আমার বেশি পছন্দের। এর কারণ হিসেবে আমার মনে হয় এতে সেই ব্যক্তিকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয় যা জীবনীতে সম্ভব নাও হতে পারে কেননা সেখানে জীবনীকার নিজের ইচ্ছানুযায়ী ঘটনা বাছাই করেন।

যাহোক, প্রথমে লেখিকার পরিচয়টা দেওয়া যাক। লেখিকার প্রকৃত নাম লীলা রায়। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন তিনি বিখ্যাত রায় পরিবারের সন্তান যে পরিবারে জন্ম নিয়েছেন উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায়, সত্যজিৎ রায়, লেখিকার বাবা ‘ বনের খবর' বইটার রচযিতা প্রমদারঞ্জন রায়। সেই পরিবারের মেয়ে যে শিক্ষিত হবে, সবকিছুকে নিবিড়ভাবে দেখার আলাদা চোখ থাকবে, হাতের লেখায় জাদু ফুটবে সেটা কি আর বলতে হয়! বলতে গেলে, লেখিকার রক্তের সাথেই মিশে আছে সাহিত্য, সঙ্গীত, চিত্রকলা সহ শিল্পের নানা দিক।

আত্মজীবনী বলতে আমরা সাধারণত বুঝি কোনো এক বৃদ্ধ/বৃদ্ধা জীবনের সায়াহ্নে বসে জীবনের হিসাব-নিকাশ মেলাচ্ছেন অর্থাৎ পুরো জীবনের একটা মূল্যায়ন ফুটে ওঠে সেখানে। কিন্তু এই বইটা ঠিক তা নয়। যদিও লেখিকা বেশি বয়সেই বইটা লিখেছেন কিন্তু এটা তিনি তাঁর জীবনের প্রথম পঁচিশ বছর সময়টাকেই তুলে এনেছেন। পাহাড়ের দেশ শিলংয়ের হাই উইন্ডস বাড়িতে জন্ম থেকে পঁচিশ বছর বয়সে যখন তিন-চারটা কলেজে অধ্যাপনা শেষে সাহিত্য নিযে নতুন করে কাজ করা শুরু করলেন সেই পর্যন্ত সময়ের নানা ইতিবৃত্ত উঠে এসেছে বইটাতে।

আত্মজীবনী দুইটা কারণে সাধারণত পড়া হয়ে থাকে। প্রথমত কোনো বিখ্যাত ও প্রিয় ব্যক্তির সম্পর্কে খুটিনাটি জানতে ( মানে হুমায়ূন আহমেদ যেহেতু আমার প্রিয় লেখক তো তাঁর আত্মজীবনী পড়া যাক এমন আর কি) এবং দ্বিতীয়ত কোনো এক ব্যক্তির উছিলায় একটা সময়কে জানতে ( যেমন এই বইটা)। লীলা মজুমদারের সাথে এই বইটার আগে আমার কোনো পরিচয় হয় নি, তাই বইটা যে আমি প্রথমোক্ত কারণে পড়ি নি সেটা তো বলাই যায়। তাহলে বইটা কেন হাতে তুলে নিলাম? কারণ আমি লীলা মজুমদারের মাধ্যমে একটা সময়কে জানতে চাচ্ছিলাম, একজন ব্যক্তির ব্যক্তিগত উপলব্ধির কাব্যিক প্রকাশ অনুভব করতে চাচ্ছিলাম।

তো বইটা পড়ে আমি কি পেলাম? যেহেতু লীলা মজুমদার সম্পর্কে আমি জানতে তেমন একটা আগ্রহী ছিলাম না তাই তাঁর ব্যক্তিগত ঘটনাবলির আমার কাছে তেমন মূল্য নেই শুধু ভাব ও ভাষা ছাড়া। তারপরেও লেখিকার পাহাড়ের প্রতি মুগ্ধতা, ভাইবোনদের সাথে মজার সময় কাটানো, বোর্ডিং স্কুলের অন্য ধরনের দিনগুলো, পোষা ঘোড়া কালোমানিকের জন্য চোখের জল ফেলা, সৌন্দর্যের জন্য মাসতুতো বোনকে হিংসা করা, বাঘ দেখতে গিয়ে মানুষ দেখে হতাশ হওয়া ( আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে বাংলার বাঘ বলা হয়), গল্পগুচ্ছে ‘ মন্দ জিনিস' খুঁজতে গিয়ে হতাশ হওয়া, ঢাকার বাকরখানি বা কাচকিমাছের প্রতি মুগ্ধতা, মৃত্যুকে বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উপলব্ধি করা ইত্যাদি ঘটনা পড়ে কখনও হেসেছি, কখনও চোখে পানি এসে গিয়েছে। আর এসব ঘটনা পড়তে গিয়ে দেখেছি লেখিকা কত সূক্ষ্মভাবে সবকিছু দেখতেন, বিচার করতেন, প্রকাশ করতেন। সাথে লেখিকার রসাত্মক ও কাব্যময় এক ভাষা তো আছেই।

লেখিকার নিজস্ব অভিজ্ঞতা হওয়া সত্ত্বেও যে দুইটা বিষয়ে বইটা থেকে সবিস্তারে জানতে পেরেছি সেটা হলো রায় পরিবারের কথা এবং শান্তি নিকেতনের কথা। আপাদমস্তক সাহিত্যিক পরিবার রায় পরিবারের প্রেসের শব্দ ও কালির গন্ধ নিয়ে ঘুম থেকে ওঠা ও ঘুমাতে যাওয়ার বর্ণনা লেখিকা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন। উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, সত্যজিৎদের কথা তাইতো এসেছে বারবার ; এসেছে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স প্রকাশনী বা সন্দেশ পত্রিকার কথাও। অন্যদিকে এসেছে চির গুণমুগ্ধ রবীন্দ্রনাথের কথা যার আদেশে লেখিকা রাঁধুনির কাজ করতেও রাজি ছিলেন! আর লেখিকা নিজে বছরখানেক শান্তি নিকেতনে কাজ করায় সেখানকার পরিবেশ, উদ্দেশ্য,কর্মপদ্ধতি আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের কথাও এসেছে সবিস্তারে।

এসব ছাড়াও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের ভারতবর্ষ, হিন্দু বনাম ব্রাহ্ম বিতর্ক, স্বদেশী আন্দোলনসহ ব্রিটেশ বিরোধী নানা আন্দোলনের কথাও লেখিকা বর্ণনা করেছেন সংক্ষিপ্তভাবে।

বইটার সবচেয়ে পছন্দের দিক ছিল এর ভাষা। কেমন যেন চুম্বকের মতো আকৃষ্ট করেছে বইটার ভাষা। ফলে লেখিকার জীবনের তুচ্ছ ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সব ঘটনাও হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয়। সাথে তৎকালীন সমাজ, রায় পরিবার ও শান্তি নিকেতন সম্পর্কিত নানন জানা-অজানা ঘটনা বইটাকে আরও আকর্ষণীয় করেছে। বইটা পড়ে একটি কথাই বারবার মনে এসেছে মানুষের জীবনে বৃহৎ ঘটনা খুব কমই ঘটে, মানুষ যখন ছোট ছোট ঘটনাকে উপভোগ করতে শেখে তখনই জীবন উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এছাড়া লেখিকার ছোটবেলার নানা দুষ্টামির কথা পড়তে পড়তে নিজের জীবনের সেই সময়টাও বারবার চোখের সামনে ভাসছিল। একসময় লেখিকার মতো আমি হয়তো মন খারাপের দিনে ভাববো ‘ কেউ আমাদের আর বকে না কেন?’।
Profile Image for Farhan.
725 reviews12 followers
June 13, 2019
অসাধারণ সুন্দর স্নিগ্ধ আত্মজীবনী। মনের শেলফে তুলে রাখার মত, পুরনো বইয়ের গন্ধভরা।
Profile Image for Akhi Asma.
230 reviews464 followers
January 26, 2021
  "হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কোথা, আর কোনোখানে।"

লীলা মজুমদার আমাকেও অন্য কোথায় নিয়ে গিয়েছেন। কি সুন্দর ঝরঝরে লেখনী। এরকম আত্মজীবনী সবারই পড়তে ভালো লাগবে।
Profile Image for Riju Ganguly.
Author 37 books1,860 followers
April 25, 2013
Can somebody else' memoir be so poignant and so touching that you start dreaming about them? I never thought so, but as it turns out, it can happen. After having this book on my shelf for quite some time, and idly attaching the "maybe later" tag to it, last night I took it to bed on a whim. I finished the book, and went to sleep. Perhaps, the heat & humidity took a toll. Perhaps, my disenchantment with my present state of leaving triggered the words "HETHA NOY, ONYO KOTHA, ONYO KONOKHANE" in my sub-conscious. But in my dreams, I walked across Shillong and Kolkata, as described by the author, feeling as if the children playing there were none other than the author and her siblings. I saw Shantiniketan not amidst the present squalor, but in all its majestic desolation. I saw.... But if you wish to see those things, feel those things, you HAVE to read this book. Highly Recommended.
Profile Image for Titu Acharjee.
258 reviews34 followers
July 31, 2021
'আর কোনোখানে' মূলত,লীলা মজুমদারের আত্মজৈবনিক বই। পড়তে বেশ ভালোই লাগছিল। কিন্তু লেখার বুনোটটা কেমন জানি আলগা বলে মনে হলো। এটুকু বাদ দিলে,বাকিটুকু উপভোগ্য।
Profile Image for Dev D..
171 reviews26 followers
April 17, 2018
প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক লীলা মজুমদার এর স্মৃতিচারনমূলক গ্রন্থ আর কোনোখানে।ঠাকুর পরিবারের পরে বাংলায় সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক পরিবার হচ্ছে রায় পরিবার, আদি নিবাস ছিলো তাদের ময়মনসিংহের মসুয়ায়। তবে রবি ঠাকুরকে বাদ দিলে ঠাকুর পরিবার থেকে রায় পরিবার এগিয়ে। ঠাকুর পরিবারের দেবেন্দ্রনাথ, সত্যেন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রনাথ এবং অবশ্যই অবনীন্দ্রনাথ লিখে গেছেন কিন্তু রায় পরিবারেরও ছিলেন উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, সুখলতা, লীলা এবং সত্যজিৎ এর বাইরে প্রমদারঞ্জন, কুলদারঞ্জনকে ভুলে গেলেও চলবে না। লীলা রায় (পরবর্তীতে মজুমদার) ছিলেন উপেন্দ্রকিশোরের কনিষ্ঠ ভাই প্রমদারঞ্জনের কন্যা। সেই প্রমদারঞ্জন যিনি সন্দেশের পাতায় বনের খবর লিখে গেছিলেন। ছিলেন সরকারী জরিপ বিভাগের বড় কর্মকর্তা। বছরে ছয় মাস তাকে জরীপের কাজে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে হতো। বাকী ছয় মাস থাকতেন শিলংএ যেখানে ছিলেন লীলা মজুমদারদের পরিবারের বাকী সবাই। জন্ম কলকাতায় হলেও জীবনের প্রায় প্রথম দশটি বছর লীলা মজুমদার কাটিয়েছেন শিলং এ। আট ভাইবোনের বিরাট পরিবার, বাবা বাইরে থাকলেও সে অভাব অনুভব করতেন না, তাদের মা সেই অভাব অনুভব করতেই দিতেন না, যিনি ছিলেন ভ্রমণ সাহিত্যিক ও সন্ন্যাসী রামানন্দ স্বামীর কন্যা, বাবার সন্ন্যাসী হয়ে যাবার পর বড় হয়েছেন উপেন্দ্রকিশোর এর কাছে, যিনি তাকে বিয়ে দিয়েছিলেন নিজের কনিষ্ঠ ভাই প্রমদারঞ্জনের সাথে। সেকালের শিলং আসামের রাজধানী হলেও ছিলো নির্জন এক মফস্বল শহর। সরল গাছ, পাহাড়ী ঝরণা ঘেরা এক ভারী সুন্দর শহর, যেখানে মাঝে মাঝে বাঘ হানা দিতো, সপ্তাহে দুদিন বাজারে সমতল থেকে মাছ আসতো, খবরের কাগজ পৌছতে সময় লাগতো দু’তিন দিন। আত্মীয় সমাগম প্রায়ই ঘটতো লীলা মজুমদারদের বাড়িতে।তিনি শিলংয়ে থাকতেই জ্যাঠা উপেন্দ্রকিশোর মারা যান, তাকে ঘিরে বিশেষ স্মৃতি নেই, তবে সুকুমার রায় বিয়ের পর সুপ্রভা রায়কে নিয়ে স্বস্ত্রীক ঘুরে গেছিলেন শিলংয়ে। রবীন্দ্রনাথ এর শিলং বাস ও ঐ সময়ে, শিলং এ-ই লীলা মজুমদার দেখা পান বাংলার বাঘ স্যার আশুতোষ মুখার্জ্জীর। শিলংএ লীলা পড়তেন ক্যাথলিকদের মিশন স্কুলে যার প্রায় ষোল আনা ছাত্রীই ছিলো দেশী ক্রিশ্চান। তবে সব স্বপ্নের মতো শিলং বাসের কালও একসময় ফুরায়।প্রমদারঞ্জন কলকাতায় বদলী হন, পুরো পরিবার চলে যায় গড়পারে উপেন্দ্রকিশোরের রেখে যাওয়া ইউ রায় এন্ড সন্সের বাড়িতে, যে বাড়িতে সত্যজিতের জীবনের প্রথম কিছুদিন কেটেছে। উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু পর সুকুমার সন্দেশের ভার নিয়েছিলেন, তবে মাত্র ছয়ত্রিশ বছর বয়সে কালাজ্বরে তার মৃত্যূতে সন্দেশের দিন ফুরালো। লীলা মজুমদারের সাহিত্যিক জীবনের হাতেখড়িও সন্দেশেই, সন্দেশ বন্ধ হবার পর তাই একটা দীর্ঘ বিরতি আছে তাঁর লেখালেখিতে। এর মাঝেই তারা অবশ্য উঠে এসেছেন ভবানীপুরে, ভর্তি হয়েছেন ডায়াশেসন স্কুলে, সেখানেই বিএ, এমএ শেষ করেছিলেন। মাঝে তিনমাস বোর্ডিং এ থাকার অভিজ্ঞতাও হয়েছিলো। কি সব আত্মীয় পরিজনের মধ্যেই না তিনি বড় হয়েছিলেন। বড় জ্যাঠামশাই সারদা রঞ্জন ছিলেন বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ, এক পিসে মশাই ছিলেন কুন্তলীন, দেলখোস সুগন্ধীর আবিষ্কর্তা। ঠাকুর পরিবারের মতো এই পরিবারটিও ছিলো ব্রাহ্ম। পড়াশোনা শেষে দার্জিলিং এ প্রথম চাকরী। তারপর শান্তিনিকেতন, পরে আশুতোষ কলেজ। মাঝে কিছুদিন কাজ করেছেন গোখলে কলেজেও। এরকম অদ্ভুত সুন্দর কিন্তু সাদামাটা শৈশব এ যুগে আর হবে না বোধহয়। আত্মীয় এবং অনাত্মীয়ের এমন দৃঢ় বন্ধনও আজকাল আর দেখা যায় না। বই শেষ করেছেন লীলা মজুমদার আটচল্লিশ বছর পর তাঁর পুনরায় শিলং ভ্রমণ দিয়ে। পুরোনো শৈশবের সেই স্মৃতির সাথে তার মিল নেই অনেক জায়গায়, সেই অরণ্য, সেই নির্জনতা আর নেই, দু’শো মাইলের মধ্যে আর বাঘের দেখা পাওয়া যায় না। শৈশব হারিয়ে গেছে চলে গেছে বহুদূরে, হেথা নয় হেথা নয়, আর কোনোখানে।
Profile Image for Shotabdi.
818 reviews192 followers
June 21, 2021
লীলা মজুমদার এর আটপৌরে লেখার ধরনটাই বড্ড মায়াময়। অবলীলায় তিনি সূক্ষ্মতম অনুভূতিগুলোও প্রকাশ করে ফেলতে পারেন। মায়াময় কিন্তু অনাড়ম্বর লেখা, যেন সামনে বসে গল্প করে যাচ্ছেন৷ আত্মজীবনী বরাবরই আমার সবচেয়ে পছন্দের জনরার একটি। তাঁর পাকদণ্ডী আগেই পড়েছিলাম। এটা বাকি ছিল, পড়ে নিলাম।
শিলং এর নাশপাতি গাছ, পাহাড়, বিলেতি মেম আর ইস্কুল থেকে শান্তিনিকেতন এর শান্তি আর সবুজ সবই লীলা মজুমদারের চোখে দেখে নিলাম আরো একবার। নিজেকে প্রকট করে না দেখিয়েও তাঁর দৃঢ় ব্যক্তিত্বের প্রকাশ পাওয়া যায় লেখাটিতে। আত্মমর্যাদাবোধ, শিক্ষা, আভিজাত্য এবং সরসতা এই সবকিছু মিলিয়েই একজন লীলা মজুমদার।
Profile Image for Ratika Khandoker.
300 reviews34 followers
August 23, 2024
ক'দিন ধরেই লেখকদের স্মৃতিচারণামূলক বই পড়া হচ্ছে। শৈশব-কৈশোর কালের স্মৃতি বিজরিত এই লেখাগুলোকে বিশেষ কোনো জনরাতে ফেলা যায় নাকি জানিনা,তবে ফেলা গেলে সেটাই হতো আমার বর্তমানের প্রিয় জনরা।কেন জানিনা,কত শত আগের সেই মায়ায় মোড়ানো বাল্যকালের স্মৃতিগুলো মনে হয় যেন আমার নিজের-ই।কিসের এক বিষণ্ণতা এসে মনটা ছেয়ে ফেলে,আবার পর মুহূর্তেই তাঁদের কোন এক মজার স্মৃতি এসে সেই মন খারাপ ভাবকে উড়িয়ে নিয়ে যায়।অথচ তাঁদের আর আমার শৈশবের মধ্যে কিন্তু বিস্তর ফারাক!
ভালো লেখা বোধহয় এমনি অনুভব করায়।

লীলা মজুমদার নামখানা মনে করলেই বুকের মধ্যে যেমন তুলতুলে আদুরে উষ্ণতা এসে জড়ো হয়,এই বইটি ঠিক তেমনি।আর মাঝে মাঝে তাতে একটু খানি হিমেল হাওয়া।
পাহাড়ের কোলে সরলগাছে ছাওয়া শৈশব লেখকের।আট-আটটি ভাই-বোন,মা-বাবা নিয়ে কেমন নিশ্চিন্ত কেটেছে তাঁর জীবনের দশটি বছর।তারপর একসময় জীবনের তাগিদেই সেই পাহাড়কে পিছু পেলেই আগে বাড়তে হয়েছে তাঁদের।এরপর কলকাতা-দার্জিলিং-শান্তি নিকেতন এ কেটেছে তাঁর পারিবারিক জীবন,ছাত্রজীবন,কর্মজীবন।শিক্ষকতা কর��ে যেয়ে পরিচয় হয়েছে নানা গুণী মানুষের সাথে।কিন্তু সর্বদাই যেন কানে বেজেছে - "হেথা নয়,হোথা নয়,অন্য কোথা,আর কোনখানে...."

বইখানা নিয়ে লেখক বলেছেন এখানে তিনি সাহিত্যের কোনো প্রলেপ দেননি,যখন যা যেভাবে মনে হয়েছে লিখেছেন।অথচ পড়ার পর যখন এই "হেথা নয়,হোথা নয়,আর কোনোখানে"- এক আস্ত আবেগ হয়ে মনের মধ্যে ঘুরপাক খায়,তখন বুঝি সাহিত্যগুণ বিচারে বইটি দারুণ!
লীলা মজুমদারের শৈশব থেকে শুরু করে তাঁর কর্মজীবন পর্যন্ত কেউ যদি জানতে আগ্রহী হোন,তাহলে "আর কোনোখানে" ছাড়া আর কোনোখানে কিছু নেই। আর সাথে রায় পরিবার,রবীন্দ্রনাথ,শান্তিনিকেতন এর কত শত স্মৃতিগাঁথা তো আছে-ই।
Profile Image for Farhana Shraboni.
23 reviews33 followers
Read
June 16, 2022
বইয়ের পাতাগুলি খসখস করে বলল;
"এসো, এসো..."
কালো কালো অক্ষরগুলি গুণগুণ করল;
"শোনো, শোনো..."

এক কোমল অনুভূতির বন্যায়,
চিত্তজগৎ যেন ভেসে গেল অপার মুগ্ধতায়...


গুরুদেব বলেছেন, "জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণাধারায় এসো" আর আমি নিজেকে বলি;
"মন যখন অস্থির হয়, কালো অক্ষরের নেশায় ডুবে যাও। ওতেই শান্তি, ওতেই মুক্তি!" আর... সুখ? সুখ কোথায়?

' হেথা নয়, হোথা নয়, অন্য কোথা, আর কোনোখানে...'

হ্যাঁ, বলছিলাম লীলা মজুমদারের জীবনলিপি "আর কোনোখানে"র কথা। যেখানে তিনি নিতান্ত সাদামাটা ভাবে, খুব সাধারণ স্বাভাবিক কথায় অথচ অনন্যসাধারণ বর্ণনার গুণে এক মলাটে ফুটিয়ে তুলেছেন তার জীবনের প্রথম প্রহরকে। মলাটবন্দী স্মৃতিরোমন্থনে, মুগ্ধ আবেশে, দু'দিনে যেন ছোট্ট লীলার সাথে সাথে বেড়ে উঠলাম ২৫ বছর, ঘুরে এলাম শিলং থেকে শান্তিনিকেতন!

অথচ এই লীলা মজুমদারের পরিচয় দিতে গিয়ে অনেকে হয়তো বলবেন ; প্রমদারঞ্জন রায়ের মেয়ে, উপেন্দ্রকিশোর রায়ের ভাতিজি, সুকুমার রায়ের বোন অথবা সত্যজিৎ রায়ের ফুফু!
কিন্তু এসবের বাইরেও তিনি নিজস্ব অদ্ভুত সুন্দর লেখনীর গুণেই অনন্য। আলাদা একটা ব্রান্ড!

পড়তে গিয়ে, পাহাড়ের নির্ঝঞ্ঝাট জীবন, গাছপালা প্রকৃতির অনন্যসাধারণ মোহনীয় বর্ণনায় যেন সবকিছু দেখতে পাচ্ছিলাম চোখের সামনে, একটা বুনো মিষ্টি গন্ধ যেন ভুরভুর করছিল চারিপাশে, মনে পড়ে যাচ্ছিল নিজের ছোটবেলা...

আচ্ছা, একটা বীজ থেকে চারাগাছ গজাবে, এ আর এমন কি নতুন কথা? কিন্তু এই লেখিকা, এমনভাবে একটা শীম বীজের অঙ্কুরোদগমের বর্ণনা দিয়েছেন, যেন সামনে থেকে দেখতে পাচ্ছিলাম, এইতো বীজ ফুটে দুটো পাতা বেরুলো!

নাতিদীর্ঘ এই বইয়ে একে একে রায় পরিবারের সব সদস্যদের গুণের পরিচয় তুলে ধরেছেন। তার চোখ দিয়ে চেনা মানুষগুলোর সাথেই যেন নতুন করে পরিচিত হই। আবার দুঃখ করেছেন, ভাই সুকুমার রায়কে আজ লোকে ভুলতে বসেছে বলে, যে মানুষটার একটা জীবনী পর্যন্ত রচিত হয়নি, এখন যার পরিচয় হয়ে উঠেছে সত্যজিৎ রায়ের পিতা হিসেবে। তাইতো আফসোস করে বলেছেন;

"লোকে যখন বড়দা কে সত্যজিৎ রায়ের বাবা বলে পরিচয় দেয়, হাসিও পায়, কান্নাও পায়! অমন বাপ নইলে কি আর অমন ছেলে হয়! যেমন গাছটি, তেমনি তার ফলটিও।"

ব্যক্তিগতভাবে 'আত্মজীবনী' আমার পছন্দের জন্রা গুলোর একটি! একজন লেখক যখন নিজের অতীত খুঁড়ে শব্দের মালা গাঁথেন, তার আসলে তুলনা হয়না!আর আমি পাঠক হিসেবে বড্ড আনাড়ি, তাইতো বিচার বিশ্লেষণের দোরগোড়াতেও পা মাড়াই না, পাছে ভুল হয়ে যায়! হাহাহা! কাজ শুধু একটাই, 'যতটুকু পারো, রস আস্বাদন করো... আর কারো অভিজ্ঞতার গল্প শুনতে শুনতে, পারলে আরেকটা জীবন বেঁচে এসো! বলা তো যায় না, নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিতেও যদি ভুলে দু কড়ি পড়ে যায়!!


"Plant a green bough within your heart,
and the singing bird will come one day, surely... "


আর হ্যাঁ, একজনকে ধন্যবাদ না দিলে আমার এইযে দু'কথা লেখার প্রয়াস অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে, যিনি আমায় পড়ার জন্য প্রতিনিয়তই তাগদা দেন। তার উদ্দেশ্যে বলতে চাই;

জীবনে বহু ব্যর্থ, বন্ধ্যা দিবস-মাসের মধ্যে এই 'বই পড়ার দিনগুলি' তারার মতো উজ্জ্বল হয়ে থাকবে স্মৃতিপটে!
Profile Image for Victor Ghoshe.
Author 7 books13 followers
June 8, 2017
Pictursque.

What a book. you just live through it.....
Mountains, forests, and a walk through a long lost time...

Fantastic !!!
Profile Image for প্রিয়াক্ষী ঘোষ.
361 reviews34 followers
September 25, 2021
" পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান ছিল আমার মায়ের বাড়িটি।"--
বইটার প্রথম লাইন ছিলো এটা। নিরাপদ একটা স্থান এবং মায়ের ছায়াতে ছোট থেকে বেড়ে উঠেছিলেন ভাইবোন মিলে। ছোট বেলা কেটেছে শিলং-এ, বাবার কর্মসূত্রে, বাবা চাকরি করতেন বন বিভাগে। মধ্য বয়সটা কেটেছে কলকাতাতে তারপর ১৯৫৪ সালে এর পর শান্তিনিকেতনে কবিগুরুর আশ্রমে, সে এক জীবনের পরম প্রাপ্তিটা যেন সেখান থেকেই পেয়ে গেলেন।

লীলা মজুমদার এর জন্ম বিখ্যাত রায় পরিবারে। লেখালেখির শুরু টা ছোট থেকে। বড়দা সুকুমার রায় এর হাত ধরে "সন্দেশ" পত্রিকাতে লেখা প্রকাশ পায়, তার পর ধীরে ধীরে অন্য পত্রিকাতে লেখা প্রকাশ পায়। অধ্যাপনা এবং লেখালেখি একই সাথে চলতে থাকে।

"আর কোনখানে" একটা স্মৃতিচারন মূলক বই। এতে লেখিকা ছোট থেকে ধারাবাহিক ভাবে স্মৃতি চারণ করে লিখে গেছেন গল্প বলার মত করে। সহজ সরল সে বলা। প্রচন্ড রকমের কোন চেষ্টা কোথাও নাই ভালো বই হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে কিন্তু দারুন মধুর সব অনুভূতি ও স্মৃতিকথা। বিখ্যাত পরিবারে জন্ম বিশিষ্টজনের সাথে চলা ফেরা পারিবারিক সূত্রে এবং কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায়। কিছু একান্ত ব্যক্তিগত জিনিস এখানে তুলে আনেননি হয়তো ইচ্ছা করেই, তাছাড়া ছোট থেকে সব স্মৃতিই তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
একটা মানুষের জীবন কি সরল অথচ কি মাধুর্য্যে ভরা।

📖 আর কোনোখানে
🖊 লীলা মজুমদার
Profile Image for Farjana Rahman.
51 reviews4 followers
August 15, 2024
বই: আর কোনখানে
লেখক: লীলা মজুমদার
প্রকাশনী: মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ (ভারত)
ধরন: স্মৃতিকথা
পৃষ্ঠা: ১৯৬
মূল্য: ২৫০ রূপী

১.

সংবেদনশীল স্নিগ্ধতায় আটপৌরে যে গল্পগুলো জমে থাকে অতীতে, সেসকল গল্পগুলো আলাদা একটা মায়ার আবরনে আবৃত থাকে। অতীতের সুতোয় টান মেরে জীবন, সংস্কৃতি বা নিতান্তাই প্রকৃতির যে ভুলে যাওয়া রূপ - তা উঠে আসে লেখকদের স্মৃতিকথার পৃষ্ঠা জুড়ে। নানা রকম যতিচিহ্নের প্রয়োগে যেমন একটা লেখা দাঁড়ায়, ঠিক তেমনি ফেলে আসা দিনের নানা স্মৃতিকথার প্রয়োগেই একটা আত্মজীবনী/স্মৃতিকথা হয়ে ওঠে সার্বজনীন মুগ্ধতার একক। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সেই মুগ্ধতা বয়ে যায় নদীর মতো। লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" তেমনি একটি বই।

২.

লীলা মজুমদার। তিনি তার প্রথম আত্মজীবনী 'আর কোনখানে'-এর জন্য ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্র পুরস্কার পান। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও মননের বিকাশের ক্ষেত্রে ঠাকুর পরিবারের মতোই আরও একটি পরিবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। রায়চৌধুরী পরিবার। কে নেই এই পরিবারে - সরদারঞ্জন, প্রমদারঞ্জন, উপেন্দ্রকিশোর, সুকুমার, কুলদারঞ্জন, সুখলতা, সত্যজিৎ রায় - স্বমহিমায় উদ্ভাসিত এক একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র। লীলা মজুমদারও এই ঘরেরই একজন উজ্জ্বল তারকা।
"বনের খবর" বইয়ের লেখক প্রমদারঞ্জন রায় লীলা মজুমদারের পিতা। মাতা সুরমা দেবী। বিয়ের আগে লীলা মজুমদার ছিলেন লীলা রায়। বাবার চাকরিসূত্রে লীলা মজুমদারের ছোটবেলা কেটেছে শিলঙে। পড়াশুনাও সেখানে। লীলা মজুমদার যখন লীলা রায়, তখন থেকেই তার লেখালেখির শুরু। ছেলেবেলা শিলঙে, মধ্যবয়স কলকাতায় এবং তার পরে শান্তিনিকেতনে বাড়ি করে সেখানেই বাস করেন। এই মহীয়সী নারী, সৃষ্টিশীল-সরস লেখিকা বেঁচে ছিলেন প্রায় শত-বছর। জন্ম ১৯০৮ সালে। মৃত্য ৫ই এপ্রিল ২০০৭ এ।

"আর কোনখানে" লেখিকার শৈশব, পাহাড়ে বেড়ে ওঠা, তার কর্মজীবনের একাংশ, শান্তিনিকেতনের সময়গুলো এবং পরিশেষে অজস্র রথী-মহারথীদের কথার মেলা।

৩.

"হেথা নয়, হেথা নয়, আর কোন্খানে।"

বলাকায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সন্ধ্যারাগে ঝিলিমিলি ঝিলমের স্রোতখানি বাঁকা" এর উক্ত লাইনটি থেকেই যে "আর কোনখানে" নামকরন সেটা সহজেই বোঝা যায়। বইয়ের মাঝেও সেই আভাস রয়েছে। মণীন্দ্র গুপ্তের “অক্ষয় মালবেরি” যদি হয় ক্যালেইডোস্কোপ ঘোর তবে লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" ও সেই ঘোরের মতোই তীব্র। পার্থক্য এই যে "অক্ষয় মালবেরি" মেলানকলি বিউটি। সেখানে "আর কোনখানে" কালারফুল বিউটি। এখানে বিষন্নতা ফুলের সৌরভে ঢাকা পড়া অনেকটা।

লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" সেই রাবিট-হোল সেটা পড়লে পাঠক নিজেকে নির্ণয় করবেন "এলিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের" এলিস-রূপে। এই রাবিট-হোলে প্রবেশ মাত্রই পাঠক দেখতে পাবেন বেগুন��� আকাশ, লতানে গোলাপের ফুলের ছড়ার সঙ্গে মাখামাখি হয়ে আছে মে-ফ্লাওয়ারের ঝোপ, বারান্দার ছাদের কড়ি থেকে ঝুলে থাকা সরলগাছের সুর ডালে অর্কিডের বাহার। ফিকে বেগুনি, হলদে সাদা, খয়েরি ফুটকি, ঘোর বাদমি ডোরা কাটা স্বর্গের সব ফুল। তার নীচে টব জুড়ে নানান জাতের জেরনিয়ম ফুল।

আছে শিলঙের অসাধারন পাহাড়ি লাইফ, প্রকৃতি ও বনের বর্ননা। বই থেকে কিছুটা তুলে দেই-

"যারা গভীর বনে কখনো যায় নি, তারা সেখানকার চেহারা কল্পনা করতে পারবে না। বাইরে তখনো বিকেলের মিষ্টি রোদ; পাকদন্ডী বেয়ে কিছু দূর ওঠা সরলগাছের গোড়ায় থোপা থোপা গোলাপী বনফুল, গাছের গায়ে হানিসাকল্ লতা, গন্ধে চারদিক ভুরভুর করছে। পথের ধারে পাথরের ছায়ায় গোছা গোছা সিলভার ফার্ণ, ওপরটা গাঢ় সবুজ, তলায় সাদা রঙ লাগা, হাতের উপর চেপে ধরলে ফার্ণের সাদা নকশা উঠে আসে।"

৪.

লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" সাহিত্যের মালঞ্চে অন্যতম সুরভিত ফুল হিসেবেই বিবেচিত হবে। যার সুঘ্রান নেয়া যে কোন পাঠকের জন্যেই নিজেকে দেয়া উপহার হিসেবেই গন্য হবে। মণীন্দ্র গুপ্তের "অক্ষয় মালবেরি" বহুবার পড়ে ভেবেছিলাম যে, এমন বই কি আর পাবো বা অক্ষয় মালবেরির মুখোমুখি দাঁড়াবার বই? "আর কোনখানে" সেই বই হবে নিশ্চিন্তি। যদিও দুটো বইয়ের মধ্যে কিছু মিল এবং তফাৎ দুটোই আছে। অক্ষয় মালবেরি যেমন শেষটায় যেয়ে কিছুটা ধূসর বা শুরুর প্রচন্ড ভালোলাগাটা মিইয়ে গেছে, লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" ও একি রকম হয়েছে। "আর কোনখানে" এর বেলা এই মিইয়ে যাওয়াটা অনেকটা লেখিকার ভাষার সরলতা বা সরস ভাবটা কমে যাওয়া। অনেকটা হয়তো বইয়ের ব্যাপ্তি কিছুটা বাড়াতে টেনে নেয়া। অথবা বয়স বেড়ে যাওয়া সময়ের গল্প সেই ভাষার যাদুতে কিছুটা অন্যরকম টোন দিয়েছে - যেটা বইয়ের অনেকাংশ জুড়ে যে মায়াবী রেশ - তা কিছুটা হালকা করেছে।

"অক্ষয় মালবেরি" আসলে খুব নির্জন। প্রকৃতির নির্জনতায় ভর করে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে এর পাঠককে। সেখানে লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" নির্জন না, বরং প্রকৃতির অকৃত্রিম রূপ এবং বর্ননায় মুখরিত এবং উৎসবময়। "অক্ষয় মালবেরি" যদি পাঠককে "আমন্ত্রন" জানায় তার রূপ-সুধা অনুভব করতে - তাহলে "আর কোনখানে" পাঠককে "নিমন্ত্রন" জানায় পাহাড়ী এক অঞ্চল ও জনপদের নানা সৌন্দর্যকে গিলে খেতে।

তবে শেষটায় যেটা বললাম সাবলীল ভঙ্গিমা এবং ভাষার যাদুতে কিছুটা টান পড়েছে অথবা পাঠকরে মনে হতে পারে কিছুটা ছন্নছাড়া ভাব - এসব কি "আর কোনখানে" বইয়ের সৌন্দর্য বা ভাব কমে কমিয়ে দেবে? পাঠকের চাওয়া আর না-পাওয়ার আখ্যান মিলাতে গেলে কি না-পাওয়ার আখ্যানটুকুই বড় হয়ে দেখা দেবে পাওয়ার তৃপ্তির থেকে? আমার বিশ্বাস না। কবি শেলির প্রসঙ্গে ব্রাউনিং কিছু অবিস্মরনীয় কথা লিখে গেছেন, যার বাংলা অনুবাদ এমন:-

"যাত্রাপথের শত বন্ধ্যা যোজনের মাঝে,
এক বিঘৎ ভূমি যেন তারার মতো জ্বলে।"

আমাদের গুমরোতে থাকা এই জীবন ও যাপনের মাঝে এমন এক বিঘৎ স্মৃতিগুলোই তো তারার মতো জ্বলে। এই জীবনে সেই সব স্মৃতিগুলোই তো ব্রিদিং স্পেসের মতো। প্রেম করতে হবে। জীবনরে আনন্দগুলো পেতে ফেলে আসা সেই সব স্মৃতির সাথে প্রেমই এই জীবন নামক ভূমিতে থিতু হতে সাহায্য করে। "আর কোনখানে" জুড়ে যে সকল মেহানীয় দিনগুলোর বর্ননা রয়েছে, যে মায়া রয়েছে, যে সিল্কের স্কার্ফের মতো আলতো লেপ্ট থেকে অনুভব রয়েছে - তা সেই তারার মতোই। জ্বলজ্বল করে। বইয়ের বাকি আক্ষেপটুকু সেখানে গৌন হয়ে দাঁড়ায়।

লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" নিঃসন্দেহে খুব গুরুত্বপূর্ন একটি বই। প্রায় এক শতক পিছিয়ে লেখা এই স্মৃতিকথা পাঠকের কাছে বিশুদ্ধ মুগ্ধতা হয়েই ধরা দেবে। শুধূ রায় পরিবারের কথাই না, পাশাপাশি উঠে এসেছে শান্তিনিকেতনের কথা, বইয়ে উপজীব্য হয়েছে বহু বড় বড় সাহিত্যিকদের ছোট ছোট খুনসুটির কথা। লীলা মজুমদারের সবচেয়ে বড় যাদুই তার ভাষা এবং কলমের সরস উপস্থিতি। "আর কোনখানে" এর কোনটা থেকেই বঞ্চিত তো নাই বরং আশীর্বাদপুষ্ট।
৫.

লীলা মজুমদারের "আর কোনখানে" মিত্র ও ঘোষ থেকে প্রকাশিত হয় ১৯৬৮ সালে। তবে বই আকারে প্রকাশের আগে মাসিক "কথাসাহিত্য" পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে প্রকাশের বছরই বইটি রবীন্দ্র-পুরষ্কারে সম্মানিত হয়। লীলা মজুমদারের শিলঙ থেকে কলকাতায় আসা এবং বিয়ের আগ পর্যন্তই সবিস্তারে লেখা আছে এই বইয়ে। "আর কোনখানে" স্মৃতিকথায় সাহিত্যের সাজ বাইরে থেকে পরানো নেই। এই সাজ অন্তরের অনেক গভীরের তলা থেকে উঁকি মারা স্মৃতির সাজ। শেষটায় বই থেকে কিছু অংশ তুলে ধরে শেষ করি:-

"যেই বনের মধ্যে ঢুকলাম অমনি চারদিক ছায়াময় হয়ে উঠল। বাইরের শব্দ সেখানে পৌঁছয় না, শুধু ঝোপের আড়ালে নিরন্তর ঝি ঝি পোকার ডাক, ঝির-ঝির জল পড়ার শব্দ আর পাইন বনের মধ্যে বাতাসের দীর্ঘশ্বাস। পাখিরা বাসায় ফিরছে, তাদের খানিক ডাকাডাকি আর ডানা ঝাপটানি। এখানকার সঙ্গে চেনা পৃথিবীর সাদৃশ্য নেই। এখানে সব রং মিলে গিয়ে অপূর্ব শ্যামল রূপ ধরেছে। কত রকম সবুজ, দিনের আলো যেটুকু পৌঁছাচ্ছে সেও সবুজ; সরলগাছের গায়ে ছাই মেশানো সবুজ পরগাছা ঝুলছে, তাদের ‘লাইকেন’ বলে, কত রকম চেহারা তাদের, হাত দিলে শক্ত কর্কশ। হঠাৎ নাকে আসে অপূর্ব সৌরভ, চারদিক চেয়ে দেখি, উঁচু ডালে অর্কিডের ফুল ফুটেছে। মোটা মোটা রসালো শিকড় বাতাসে মেলে ধরা, কোথাও সোনালী ফুলের ছড়া, তাদের বুকের ভেতরটা গাঢ় লাল, কোথাও যেন মোমের তৈরি সাদা ফুলে বেগনির ছটা। -- আপনা থেকেই আমাদের গলার স্বর নিচু হয়ে আসে, এখানে উঁচু গলায় কথা বলতে ইচ্ছা করে না।"

আপনা থেকেই পাঠকরে মনে তারার মতো জ্বলতে থাকবে একরাশ ভালোলাগা আর মুগ্ধতার রেশ "আর কোনখানে" এর স্পর্শে।
Profile Image for Asif Khan Ullash.
143 reviews8 followers
December 23, 2023
এই বইটি আমার পড়া লীলা মজুমদারের লেখা দ্বিতীয় বই। এর আগে ‘খেরোর খাতা’ পড়ার সময়ই তার সুন্দর, মসৃণ গদ্য ভালো লেগেছিল, এই বইতেও ভালো লাগার ধারা অব্যাহত থাকলো।

বইটি শৈশব থেকে তারুণ্যের কিছু সময় পর্যন্ত স্মৃতিচারণ। ল��লা মজুমদার বিখ্যাত রায় পরিবারের সন্তান, হ্যা সেই সুকুমার, সত্যজিৎ রায়-পরিবারই। তার বাবাও কম বিখ্যাত নন, “বনের খবর”- এই একটি বইই লেখক প্রমদারঞ্জন রায় কে বিখ্যাত করে রেখেছে।
লীলা মজুমদারের লেখায় শিলং-এ তার বাল্যকাল, মিশনারি স্কুলে পড়ার স্মৃতি, পরবর্তীতে কলকাতা শহরে কলেজে পড়বার স্মৃতি, শান্তিনিকেতন ও আশুতোষ কলেজে শিক্ষকতার স্মৃতির সাথে সাথে রায়বাড়ি, নিজের পরিবারের নানা কথাও উঠে এসেছে। লেখার ক্ষেত্রে লীলা মজুমদার ছিলেন একদম সৎ, অকপট। তবে খেরোর খাতায় যে সূক্ষ্ম হিউমারের ছোঁয়া ছিল এই বইতে সেটা না পেয়ে একটু হতাশ-ই হয়েছি। সবমিলিয়ে ভালো বই অব্যশই কিন্তু পড়তেই হবে এমন কোন বই নয়।
Profile Image for Polo.
87 reviews
October 12, 2022
লীলা মজুমদারের আত্মজীবনীর গুণ নির্ধারণ করার ধৃষ্টতা আমার নেই। পাকদন্ডীর মত বই আমি খুব কম-ই পড়েছি। তারপরেই এই বইটি পড়লে এই বইটিকে তুলনামূলকভাবে অসম্পূর্ণ বলে মনে হয়। লেখিকার জীবন, ভাবদর্শণ এই বইটির পাতায় জায়গা পেয়েছে। বইটির শেষ বাক্যটি আমার চিরকাল মনে থেকে যাবে।
Profile Image for Sabah Puspa.
22 reviews17 followers
December 12, 2022
সরল সহজ জীবন, সরল হিসাব। সে সময়ের সমাজের অন্য এক রূপ, পাহাড়ের বুকে জীবন - শান্ত স্নিগ্ধ এক অনূভুতি।
Profile Image for Aishwarja.
6 reviews
December 12, 2024
আদর আদর আর মিষ্টি করে লেখা লীলা মজুমদার এর এই বইটি কেবল পড়তেই ইচ্ছে করে। কী সহজ, কী সুন্দর! যেনো চোখের সামনেই সব দেখতে পাচ্ছি। নিঃসন্দেহে মনের আরাম।
Profile Image for Md. Tahmid Mojumder.
87 reviews7 followers
May 8, 2023
"এক-একদিন সকালে দেখেছিলাম সেই জালে শিশিরের ফোঁটা দুলছে, তাতে সকালের রোদ পড়ে হাজার রঙ ঠিকরোচ্ছে, যেন হীরের মালাখানি।"

সামান্য একটা মাকড়সার জালের বর্ণনা এমনই অপরূপ হয়ে ওঠে লীলা মজুমদারের জাদুকরী কলমে।

এরপরেই পাই মায়ের ফুলগাছের অপার্থিব সৌন্দর্যের কথা—

"..... গোল গোল একগোছা পাতার মধ্যে গাঢ় বেগনি ভায়োলেট ফুটত, পাঁচটি পাপড়ি অপরূপ ভঙ্গিতে সাজানো, মাঝখানে কেশর কোনাকুনি বসেছে, সে ফুলের গন্ধ এ জগতের নয়।"

প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ণনার পাশাপাশি নিজের আশপাশের মানুষজনের কথাও পাই অতি চমৎকারভাবে। যেমন, লেখিকা তাঁর ছোটবোনের ছোট্টবেলার এক বর্ণনা দিচ্ছেন এভাবে—

"..... তার উপরে আমার ভারি ন্যাওটা হয়ে উঠল। সে আরেক জ্বালা; একেবারে ছাড়তে চাইত না। স্কুলে যাবার সময় লুকিয়ে পালিয়ে যেতে হত। ফিরবার সময় তাড়াতাড়ি পা চালাতাম, বাড়িতে যে দুটো নীল ছায়া লাগা চোখ আর দুটো নরম নরম বাহু আমার জন্যে অপেক্ষা করত। সেই দশ বছর বয়স থেকেই বুঝতে শুরু করলাম ভালোবাসার বড় জ্বালা!"

পড়ার সময় মনে অনেক আনন্দ ছিল ঠিক কিন্তু এ-ও সত্য যে, যাদের জীবন এমন বৈচিত্র্যময় শেষের দিকে তাদের নিঃসঙ্গতার হাহাকারটাও একটু বেশিই জোরালো হয়, যার বর্ণনা পাই এই অংশটুকুতে—

"আর আমার সেই ভালোবাসার মানুষগুলোর কী হল?
বাবা, মা, জ্যাঠামশাইরা, জ্যাঠাইমারা, পিসিমারা, মাসিমারা, বড়দা, বড়বৌঠান, মণিদা, আরো কতজনা কেউ বয়স হয়ে, কেউ বয়স না হতেই, যার যখন সময় হল, চলে গেছেন। একদিন যাঁদের বারণ উপদেশ শুনে তিতিবিরক্ত হয়ে উঠতাম, এখন তাঁরা কেউ আমার কোনো কাজে বাধা দেন না বলে মনটা কেমন করে।"

সবমিলিয়ে "আর কোনোখানে" অসাধারণ। তবে লেখিকার "পাকদণ্ডী" পড়ে থাকলে এটা আর না পড়লেও চলবে বলে মনে হয়েছে। স্মৃতিকথা ঘরানাটা অনেক বেশি পছন্দের বলেই এটা না পড়ে থাকতে পারিনি।
Displaying 1 - 28 of 28 reviews

Can't find what you're looking for?

Get help and learn more about the design.