“পুত্র পিতাকে” পড়েছিলাম কয়েক বছর আগে। তখন থেকে অপেক্ষায় ছিলাম “পিতা পুত্রকে” পড়ার জন্য। গেলো বছরের ঠিক শেষ দিকে হঠাৎ একটা বইয়ের দোকানে পেয়ে গেলাম।
পুত্র পিতাকে এর সাথে যদি তুলনা করি তবে পিতা পুত্রকে একটু দুর্বল। তবে যদি তুলনা না করি তবে বইটা দারুণ। তিন কুড়ি দশ বছর বয়সে এক পিতা তার আত্মজ সন্তান কে শোনাচ্ছে তার বেড়ে ওঠার গল্প। এই বেড়ে ওঠার মধ্যে পিতা অতিক্রম করেছে একটা বিশাল ঐতিহাসিক সময় কে যেখানে আছে একটা মহাযুদ্ধ, ভারতের স্বাধীনতা, ভারত ভাগ, দাঙ্গা, আরও কত কি!
পিতা পুত্রকে বলে গেছে তার জীবনের কাহিনী। ঠিক পাশে পাশে বহমান নদীর মতো বয়ে চলেছে সে সময়ের গ্রামীণ জীবন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা, রাজনীতি, ধর্ম আরও কত কি।
এমন একটা সময় নিয়ে যদিও আরও অনেক দারুণ লেখা পাওয়া উচিৎ ছিল। তাও যেটুকু পেলাম মন ভরে নিলাম।
সম্ভবত, দুই বছর আগে পড়েছিলাম উপন্যাসটা। সাংবাদিক চাণক্য সেন (ছদ্মনাম) রচিত 'পুত্র পিতাকে' আগে পড়েছিলাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিই 'পিতা পুত্রকে' পড়ব।
পিতা জন্মেছেন, বেড়ে উঠেছেন এক প্রজন্মে তারই সন্তানের বেড়ে ওঠার সময়কাল একেবারেই ভিন্ন। দু'জনের মধ্যকার সময়ের ব্যবধান শুধুই কালের পার্থক্য নয়। কালের কলসে সময়ের আবর্তে নতুন জলে ভর্তি হয়েছে। সেইসাথে এসেছে চিন্তার,আচরণের, দেখবার ভঙ্গির পরিবর্তন। এই পরিবর্তন উপলব্ধি করে একজন পিতা লিখছেন তার আত্মজকে। তাতে একজনের প্রতি অন্যজনের স্নেহ আছে। আছে মমত্ববোধ, আছে দু'জনকে দু'জনের বুঝবার প্রয়াস। বোঝাবার প্রচেষ্টা। মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ তো থাকবেই।
চাণক্য সেন খুব গুছিয়ে লিখতে পারেন। সাংবাদিক হওয়ার দরুণই হয়তো বিশ্বরাজনীতি, ইতিহাসের ওপর দখলটা ভালো। সেইসব ঘটনাকে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবে লিখেছেন ঔপন্যাসিক।