Keigo Higashino (東野 圭吾) is one of the most popular and biggest selling fiction authors in Japan—as well known as James Patterson, Dean Koontz or Tom Clancy are in the USA.
Born in Osaka, he started writing novels while still working as an engineer at Nippon Denso Co. (presently DENSO). He won the Edogawa Rampo Prize, which is awarded annually to the finest mystery work, in 1985 for the novel Hōkago (After School) at age 27. Subsequently, he quit his job and started a career as a writer in Tokyo.
In 1999, he won the Mystery Writers of Japan Inc award for the novel Himitsu (The Secret), which was translated into English by Kerim Yasar and published by Vertical under the title of Naoko in 2004. In 2006, he won the 134th Naoki Prize for Yōgisha X no Kenshin. His novels had been nominated five times before winning with this novel.
The Devotion of Suspect X was the second highest selling book in all of Japan— fiction or nonfiction—the year it was published, with over 800,000 copies sold. It won the prestigious Naoki Prize for Best Novel— the Japanese equivalent of the National Book Award and the Man Booker Prize. Made into a motion picture in Japan, The Devotion of Suspect X spent 4 weeks at the top of the box office and was the third highest‐grossing film of the year.
Higashino’s novels have more movie and TV series adaptations than Tom Clancy or Robert Ludlum, and as many as Michael Crichton.
বই শেষ করে আমার প্রথম প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, "আমি কি নিজের প্রত্যাশার শিকার?" প্রতিবার "হিগাশিনো মাপের টুইস্ট" দেওয়া হিগাশিনোর পক্ষেও যে সম্ভব না এটা তো আমার বোঝার কথা। "দ্য রেড ফিঙ্গার" মোটামুটি ভালো লেগেছে। সালমান হকের অনুবাদ স্বভাবসুলভভাবেই চমৎকার। কিন্তু কাহিনি বেশ ছোট ও সরলরৈখিক ; আমি ঠিক একাত্ম হতে পারলাম না। কাগার ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনাটাই বরং বেশি আকর্ষণীয় মনে হোলো।
“Trên đời này không có gia đình bình thường nào cả. Dù nhìn có vẻ bình thường, nhưng gia đình nào cũng có một câu chuyện khó nói”.
Akio Maehara, người đàn ông sống cùng vợ, Yaeko, và người mẹ già mắc bệnh Alzheimer. Một ngày nọ, Akio và vợ phát hiện con trai của họ, Naomi, đã giết chết một bé gái. Đứng trước sự phản đối của Yaeko, ông Akio chỉ còn cách cố gắng che đậy tội ác của con trai mình.
Ngay từ đầu hung thủ đã lộ diện. Nhưng mình lại cực kỳ thích cách câu chuyện khai thác những khía cạnh bất đồng, những mâu thuẫn trong một gia đình, thậm chí là những vấn đề liên quan tới xã hội rất hay. Từ việc nuôi dạy con cái, bà Yaeko luôn nuông chiều con quá mức, hay ông Akio nhu nhược và luôn lãng tránh các vấn đề đang xảy ra trong gia đình, để rồi tất cả dẫn đến bi kịch chẳng ai mong muốn. Việc miêu tả con người khi đối mặt với tội ác mà họ gây ra rất chi tiết.
Bên cạnh đó, câu chuyện khai thác những bất đồng giữa cha mẹ và con cái, giữa con dâu và gia đình chồng. Tác giả cài cắm những vấn đề chấp nhận tội phạm sau khi cải tạo - điều gây nên nỗi lo, khiến cho vợ chồng Maehara mâu thuẫn với những quyết định của họ. Càng đọc mình cảm thấy chạnh lòng và xót, bởi cách ông Akio và vợ đối xử với người mẹ già của họ thật nhẫn tâm. Giá như họ nghĩ đến, rằng cha mẹ của họ đã từng yêu thương họ thế nào. Nên phải nói, vấn đề phụng dưỡng cha mẹ cũng là một vấn đề nhức nhối trong mỗi gia đình.
Mình vốn đã đoán được một tình tiết ở cái kết, nhưng khi đọc đến đó mình vẫn thấy rùng mình, tình yêu thương của người mẹ luôn vô bờ, bạn cũng sẽ biết tại sao lại là "Ngón tay đỏ".
Trong series về thanh tra Kaga Kyoichiro, mình chỉ mới đọc mỗi Malice. Nhưng sau khi đọc tập này mình chính thức "lọt hố" thanh tra Kaga. Cách Kaga điều tra và ứng xử khi phá án nó tinh tế thật sự. Trong tập này còn cho biết về mối quan hệ "lạnh nhạt" giữa Kaga và người cha của anh ta, nó cũng khá là buồn. Nhìn chung đây là một cuốn sách dễ đọc, nhiều cảm xúc. Không cần những cú twist hay tình tiết khó đoán, thông qua những phân tích tâm lý nó mang đến rất nhiều ý nghĩa.
দুর্দান্ত কিয়োচিরো কাগা!!বইটা শেষ করে এই একটা কথাই মাথায় ঘুরছিল।ম্যালিস,নিউকামার এ কাগা সম্পর্কে জানা গেলেও "দ্য রেড ফিংগার" এ কাগাকে নতুন করে গভীরভাবে উপলব্দি করলাম।বইটা যেন শুধুমাত্র কিয়োচিরো কাগার,গল্পটার শেষ দিকে যে মনস্তাত্ত্বিক খেলা টা দিছিল কাগা তা ছিল একেবারে "লা জওয়াব"।
ম্যালিস পড়ে হয়েছিলাম হতভম্ব,নিউকামার পড়ে হয়েছিলাম মুগ্ধ এর বৈচিত্রময় প্লটের জন্য,দ্য রেড ফিংগার পড়ে হইলাম বিষাদগ্রস্ত।এটা নিছক কোন রহস্য উপন্যাস নয়,মানুষের মনের অন্ধকার দিকটা যেভাবে লেখক তাঁর ট্রেডমার্ক হিগাশিনো টুইস্টের মাধ্যমে আলোকপাত করেছেন তা ঠিকঠাক ভাবে লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না আমার পক্ষে।
হিগাশিনো ইজ আ মাস্টার স্টোরি টেইলার,হি আজ আ জিনিয়াস।কি সুন্দর গল্প এবং কি সুন্দর সেই গল্পের এক্সিকিউশন।একদম নিখুঁত পুলিশ প্রসিডিওরাল এর পাশাপাশি মনস্তাত্ত্বিক খেলা দুইয়ের সংমিশ্রণে যেন " পরিপূর্ণ " একটা বই❤️
Salman Haque ভাই আমি সিউর আপনি বইটা শেষ করার পর আমার মত আপনিও বিষাদগ্রস্ত হয়েছেন,একটা অদ্ভুত খারাপ লাগা লাগছিল না?মনে হয়েছে নিশ্চয় হয়ত আপনার বইটিতে যা ঘটেছে এবং যেভাবে ঘটেছে তা না হলেই হয়ত ভাল হত।ম্যালিসের সাথে যৌথভাবে কাগা সিরিজের সেরা বই হয়ত এটাই❤️
আমার আসলে করুণা হয় কাগা সিরিজের অপরাধীগুলোর জন্য। এরা যতই নিখুঁত পরিকল্পনা করুক না কেন কোনো খুন বা অপরাধ আড়াল করার জন্য, মডার্ন ডে পোয়ারো ডিটেকটিভ কাগা সেটা ধরে ফেলবেই তার তীক্ষ্ম বুদ্ধি ও আশেপাশের পরিবেশে থাকা সূক্ষ্ম ক্লুর সাহায্যে। আর ডিটেকটিভ কাগা হ্যারি বশ, হ্যারি হোল বা জ্যাক রিচারের মত অমানবিক কেউ নয় (তবে তদন্তে বাকিদের মতোই ভয়াবহ অমানবিক), নাহলে প্রত্যেকটি সাস্পেক্ট-এর বাড়িতে যাওয়ার সময় মিষ্টি, কেক আর কয়জন ডিটেকটিভ নিয়ে যায়?
রেড ফিঙ্গারও আরেকটা রহস্য উপন্যাস হয়েও রহস্য উপন্যাস নয়। ছেলের অপরাধ আড়ালের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা এক বাবা-মার গল্প। কিন্তু তাদের দূর্ভাগ্য, মুখোমুখি হতে হয়েছে ডিটেকটিভ কাগার। পরিকল্পনা যতই নিখুঁত হোক, লাভ নেই। তবে কিভাবে কাগাকে তাদেরকে ধরে ফেলে সেটাই গল্পের মূল আকর্ষণ। আপনি জেনে যাবেন খুনি কে, অপরাধ বা মোটিভ কিংবা মোডাস অপারেন্ডি কি। কিন্তু তবুও শেষে অপেক্ষা করবে চমক। ব্যক্তি কাগাকে আরও বিস্তারিত জানার আগ্রহ যাদের ছিল তারা এই বইয়ে তাকে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। কাগার বাবা সাবপ্লটটা অসাধারণ, শেষটা দীর্ঘশ্বাস ফেলতে বাধ্য করে।
একজনের কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন বাঙালির কাছে কেইগো হিগাশিনোকে পরিচয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন যিনি সেই আদী, অকৃত্রিম, Salman Haque ভাইয়া। এই উপন্যাস সরাসরি জাপানি থেকে নিখুঁতভাবে বাংলায় আনতে যে পরিমাণ পরিশ্রম উনাকে করতে হয়েছে সেটা ধারণা করা কষ্টসাধ্য। উনার কাছে পাঠকমহল স্বাভাবিকভাবেই কৃতজ্ঞ থাকবে এত দুর্দান্ত একটা বই উপহার দেয়ার জন্য।
ডিটেকটিভ কাগা আমার অন্যতম প্রিয় ডিটেকটিভ। তাকে নিয়ে কাজ করার সুযোগ আমি পেয়েছি বলে ভাইয়ার কাছে কৃতজ্ঞ। সামনেই আসছে আ ডেথ ইন টোকিও।
Wasif Noor ভাইয়ের প্রচ্ছদের কথা না বললেই নয়। এই সিরিজের প্রচ্ছদ নিয়ে আমরা বরাবরই খুঁতখুঁতে। একেবারে পারফেক্ট করতে চেয়েছি। আমি তেমন কিছুই করিনি অবশ্য এক্ষেত্রে। সালমান ভাইয়া ও ওয়াসিফ ভাইয়ের ব্রেইনস্টর্মিংয়ের ফসল কাগা সিরিজের প্রচ্ছদগুলো।
যাইহোক, দ্য রেডফিঙ্গার বইটা সবসময়ই আমার জন্য বিশেষ কিছু হয়েই থাকবে। সবাইকে পড়ার আমন্ত্রণ রইলো এই সুন্দর বইটা।
এককথায় দারুন। কিয়োচিরো কাগার সাথে পাল্লা দেয়া সহজ নয়। কষ্ট পেয়েছি মা-চানের জন্য, কষ্ট পেয়েছি তাকামাসার জন্য। কষে লাথি মারতে চেয়েছি আকিও, ইয়োইকো আর নাওমিকে। দ্য রেড ফিঙ্গার শুধু একটা গোয়েন্দা কাহিনীই নয়, এটা মানব মনের গহীনে লুকিয়ে থাকা অন্ধকারের কাহিনী।
চিরাচরিত হিগাশিনোয়ী টাইপ হলো না, তবে, বেশ দ্রুত গতিতেই এগিয়েছে গল্পের কাহিনী। পড়ে মন্দ লাগে নাই, ইয়াইকোর উপর প্রচন্ড মেজাজ গরম হচ্ছিল আরকি এই যা।
অনুবাদ কিংবা রুপান্তর নিয়ে কিঞ্চিৎ অভিযোগ আছে, তুমি থেকে হঠাৎ তুই, ভেবেছিলাম এর জায়গায় ভাবছিলাম কিংবা ভাই বোনের কনভারসেশনে তুই এর ব্যবহারে, তাল কেটেছে একটু।
কাগা সিরিজ হলো ক্লাসিক থ্রিলার 👌👌 ২ মাস পর পর একটা বই পড়ি, সব বই শেষ হয়ে যাবে বলে! উনার লিখা রিলেট করা যায় আর বাস্তবিক। খুনী ধরা আর ডিটেকটিভ বিষয় ই মুখ্য নয় উনার লিখাতে, বরং বাস্তবিক ঘটনা আমরা যেভাবে রিলেট করি তাই ফুটিয়ে তোলা লেখকের প্রয়াস। তাই বলে থ্রিল যে নাই, তা কিন্তু না! সেই লেভেল এর সাস্পেন্স আছে। গল্পের শুরুতেই খুনী কে তা জানা যায় যা উনার সব বইয়ের ট্রেডমার্ক। পড়তে নিলে মনে হয় তেমন থ্রিল পাওয়া যাবে না কিন্তু হয় তার উলটো। নিজের ছেলে কে বাচাতে নানা ধরনের সেট আপ করেন বাবা কিন্তু কাগা সাহেব উচু লেভেলের একটা ক্যারেক্টর যিনি বের করে ফেলেন।
বইয়ে কাগা ও তার বাবার অংশ টুকু অনেক টাচি ছিল!
বইয়ের সেরা অংশ হলো, লেখন খুনি ও তার আশে পাশের লোকের সাইকোলজি নিয়ে এতো ডিটেইলস লিখেন যা ভাল লাগতে বাধ্য। মার মার কাট কাট হাই পেশড বই যারা পছন্দ করেন,তারা দূরে থাকুন। অন্যদের জন্য কাগা সিরিজ হাইলি রিকমেন্ডেড। প্রথম নিউকামার পড়েছিলাম বছর খানেক আগে! কিন্তু অনেক দিন পর সিরিজের রিভিউ বলবো না, কাগার সিরিজের প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করলাম।
এইটা পিওর ক্লাসিক এক কথায়!
বই : রেড ফিংগার লেখক : হিগাশিনো অনুবাদক : পছন্দের সালমান ভাই রেটিং : ৪.৫/৫
আকিও মায়েহারা, একজন সাধারণ মধ্যবয়সী জাপানিজ পুরুষ। প্রায় দেড়যুগ ধরে সংসার করা স্ত্রী ইয়াইকো, কিশোর ছেলে নাওমি আর বৃদ্ধ মা মাসায়েকে নিয়ে বসবাস টোকিওতে ওর মা-বাবার বাড়িতে। বাবা বার্ধক্যজনিত শারীরিক মানসিক রোগে ভুগে মারা যাওয়ার পর তার বাড়িতেই পরিবারসমেত থাকে আকিও।
বাইরে থেকে খুব স্বাভাবিক পরিবার মনে হলেও আদতে আকিওর পরিবারের সদস্যের মধ্যকার বন্ধন ওরকম দৃঢ় নয়। একদিকে স্ত্রীর প্রভাবে নিজের বাবা মায়ের যত্ন না নিতে পারার অনুতাপ, অন্যদিকে কিশোর নাওমি তথা সংসারের উপর নূন্যতম নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পারার ব্যর্থতা। সবমিলিয়ে সাংসারিক অশান্তি থেকে বাঁচার জন্য ধীরে ধীরে পরিবার থেকেই বিচ্ছিন্ন হতে থাকে সে, কাজে ব্যস্ত থেকে শুরু করে আরও নানাভাবে।
অন্যদিকে ইয়াইকো, সংসারে নিজের ছেলেকে নিয়েই যার সব চিন্তা, একটা ফুলের টোকাও পড়তে দেয় না নাওমির উপর। সেই সাথে সে নিজের শ্বাশুড়িকে করে তুমুল অপছন্দ। বার্ধক্যজনিত কারণে মাসায়েও ভুগছে স্মৃতিভ্রংশ রোগে। সবকিছুর প্রভাবে নাওমির আচরণ মানসিকতা খারাপ হতে থাকে দিনকে দিন, সম্মান নেই নিজের বাবা-মার প্রতি একটুও। এমনই করে জীবন কাটছিল আকিওর।
সব হিসেবনিকেশ বদলে যায় একদিন, যখন আকিওকে ইয়াইকো অফিস শেষে কল দিয়ে ভীত কন্ঠে জরুরি প্রয়োজনে বাসায় আসতে বলে। বাসায় এসে সে দেখে তাদের বাগানে পড়ে আছে একটা বাচ্চা মেয়ের লাশ, তাদের ছেলে নাওমির আকামের ফল। শুরুতেই পুলিশে খবর দিতে চাইলেও স্ত্রীর প্ররোচনায় আর নিজেদের সম্মানের কথা ভেবে আকিও নেমে পড়ে এক বিপদজনক রাস্তায়।
টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মাতসুমিয়া, যার পিতৃতুল্য মামা তাকামাসা এখন মৃত্যুশয্যায়। সে যতোটা সম্ভব চেষ্টা করে তার মামাকে হাসপাতালে সময় দিতে। কিন্তু ওনার একমাত্র ছেলে, মাতসুমিয়ার মামাতো ভাই কিয়োচিরো কাগা একবার ওনার মুখটাও দেখতে আসে না। সাত বছরের মেয়ে ইউনার লাশ পাওয়া যাওয়ার পর তদন্তে নামে টোকিও মেট্রোপলিটন পুলিশ আর স্থানীয় থানা। তদন্তদলে আছে ডিটেকটিভ কাগা আর মাতসুমিয়া উভয়েই।
ক্লু অনুযায়ী কাগা ঠিকই হাজির হয় অপরাধীর দোরগোড়ায়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে আকিও করে ভয়ংকর এক পরিকল্পনা। কি সেটা? আসল অপরাধী কি শাস্তি পাবে? কোন গোপনীয়তা লুকিয়ে আছে পরিবারের মাঝে? কেনই বা কাগার সাথে তার বাবার এই দূরত্ব? এই নিয়ে জনপ্রিয় জাপানি লেখক কেইগো হিগাশিনোর অন্যতম চরিত্র ডিটেকটিভ কাগাকে নিয়ে লেখা বই 'দ্য রেড ফিঙ্গার'।
কেইগো হিগাশিনো আমার অতি পছন্দের লেখক। হাতের কাছে তার বই পেলেই সংগ্রহ করে ফেলি। কিন্তু সালমান হকের অনুবাদে 'দ্য রেড ফিঙ্গার' এর অত্যাধিক সমালোচনা দেখে বইটা পড়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিলাম। পরবর্তীতে ডিটেকটিভ কাগার সাথে পরিচয় 'নিউকামার' বইটা দিয়ে। একটা সাধারণ মার্ডার মিস্ট্রিকে হিগাশিনো একদম ভিন্নধারায় প্রকাশ করেছেন সেই বইয়ে। সেই বইয়ে চমৎকার গল্পকথন বাদেও ক্ষুরধার বুদ্ধি আর কমনীয় ব্যক্তিত্বের পাঠকপ্রিয় গোয়েন্দা কিয়োচিরো কাগাকেও ভালো লেগেছিল খুব।
এরপরে পড়ি ডিটেকটিভ কাগাকে নিয়ে লেখা হিগাশিনোর সবচেয়ে জনপ্রিয় বই 'ম্যালিস'। টানটান উত্তেজনার দূর্দান্ত রহস্য, মাইন্ড গেম দিয়ে ভরা সেই বইটা শেষ পর্যন্ত একটু খারাপ লাগার কারণ ছিল এক্সপেক্টশন অনুযায়ী শেষের রহস্যভেদটা ভালো লাগে নি, আর তাতে ডিটেকটিভ কাগার ব্যক্তিত্বের বুদ্ধিভিত্তিক তদন্ত ছাড়া অন্যকিছু ফুটে উঠে না। পরবর্তীতে কাগার গল্প দেখি হিগাশিনোর বই থেকে বানানো 'দ্য ক্রাইম দ্যাট বাইন্ডস (২০১৮)' সিনেমায়।
সেই সিনেমার গল্পে হিগাশিনো সুলভ রহস্য, কাগার বুদ্ধিমান তদন্ত, তাতে তার ব্যক্তিগত জীবন জড়িয়ে পরা, শেষে আবেগের সাথে রহস্যভেদ সবমিলিয়ে দূর্দান্ত লেগেছিল। ফিল্মমেকিং আর কাগা চরিত্রে অভিনেতা হিরোশি আবের অভিনয় ছিল চমৎকার। এরপরেই দেখেছিলাম রেড ফিঙ্গার বই থেকে বানানো টিভি মুভিখানা, কারণ কাগার ব্যক্তিগত জীবনের গল্পটা শুরু হয় এই গল্পেই। ��লে 'দ্য রেড ফিঙ্গার' বইয়ের গল্পটা আমার জানা।
তারপরও পড়লাম কারণ ডিটেকটিভ কিয়োচিরো কাগা আমার খুব পছন্দের চরিত্র হয়ে গিয়েছে। সেই সিরিজের অনুবাদকৃত সবগুলো বই-ই পড়ার ইচ্ছে। 'দ্য ক্রাইম দ্যাট বাইন্ডস' এর সোর্স ম্যাটেরিয়াল বই 'দ্য ফাইনাল কার্টেইন' ইতিমধ্যেই বাংলায় অনূদিত হয়ে গিয়েছে, সেটাও পড়ব। এছাড়া সংগ্রহে সিরিজের 'এ ডেথ ইন টোকিও' বইটাও আছে।
যাইহোক, অনেক অযথা বকলাম, এ��ার বইয়ের ব্যপারে আসি। প্রথমত গল্পটা পুরো জানা ছিল, এটা হিগাশিনোর অন্যান্য বইগুলো থেকে একদম সাদামাটা। মূল গল্পে রহস্যের চেয়েও বেশী জাপানের (এককথায় বলতে গেলে সব দেশেরই) পরিবারগুলোর মধ্যে থাকা কিছু সামাজিক ইস্যু আর মনস্তত্ত্বকে দেখাতে চেয়েছেন লেখক। একারণে গল্পে বিশেষ রহস্য নেই, এটা হিগাশিনোর অন্যান্য বইগুলোর মতো হাউ-ডান-ইট আর ওয়াই-ডান-ইট ফর্মূলায় পরে না।
গল্পের রহস্য অনুযায়ী পুলিশের তদন্তকার্যও সাদামাটা, তবে এর মধ্যেও ডিটেকটিভ কাগা তার মেধার সাক্ষর রাখতে পেরেছে, প্রকাশ পেয়েছে তার সহানুভূতিশীল মনোভাবও। অন্যান্য চরিত্রগুলোর মধ্যে আকিওর চরিত্রায়ন ভালো ছিল, যেভাবে তার পরিবার নিয়ে মানসিক টানাপোড়েন, অধঃপতন একইসাথে অপরাধবোধটা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তা বেশ বাস্তবিক। মূল অপরাধী হিসেবে সে হিগাশিনোর 'সাসপেক্ট এক্স', 'ম্যালিস' কিংবা 'দ্য নেম অব দ্য গেম ইজ অ্যা কিডন্যাপিং' বইগুলোর চরিত্রের মতো কোনো বুদ্ধিমান মাস্টারমাইন্ড নয়, বরং তার কাজকর্ম চিন্তাভাবনা একজন সাধারণ মধ্যবয়সী মানুষ হিসেবে বাস্তবসম্মত ছিল।
এরবাদে গল্প অনুযায়ী মাতসুমিয়া আর কাগার বাবা তাকামাসার চরিত্র গঠন ভালো ছিল। বাকীসব চরিত্র একমাত্রিক। গল্পে হিগাশিনোসুলভ টুইস্ট ছিল দুয়েকটা, প্রেডিক্ট করা খুব একটা কঠিন না। আর শেষে বরাবরের মতো একটা ইমোশনাল টোন ক্রিয়েট করতে চেয়েছেন লেখক। সেটা মোটামুটি হয়েছে, পুরোপুরি কাজে দেয় নি। কারণ বিষয়টা মা-চান রিলেটেড, কিন্তু গল্পের প্রয়োজনেই তাকে স্পেস দেওয়া হয় নি ঠিকমতো।
এই বইয়ে লেখক যেই সামাজিক ইস্যুটা তুলে ধরেছেন তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়, কিন্তু গল্পে সেটার ফুটে ওঠাটা কতটা সার্থক? আমার মতে খুব বেশী যুতসই হয় নাই। কারণ এতে ইয়াইকো বা নাওমির মতো চরিত্রগুলোর গঠন একেবারে একমাত্রিক ছিল। বলছি না যে তাদের প্রতি সিম্পেথি তৈরি করতে, কিন্তু একটু বহুমাত্রিকভাবেও উপস্থাপন করা যেত। তবে ভালো লেগেছে কাগার ব্যক্তিগত জীবনের গল্পটা, কিংবা বইয়ের এন্ডিং।
সবমিলিয়ে 'দ্য রেড ফিঙ্গার' আমার পড়া হিগাশিনোর সবচেয়ে দূর্বল বই। উপন্যাস হিসেবে মানায় না এটাকে, একটা বড়গল্প হলেও হতো। তবে এই ডিটেকটিভ সিরিজটা পড়লে 'দ্য রেড ফিঙ্গার' পড়া উচিত, কারণ এই বইয়ের কাগার গল্প পূর্নতা পাই সিরিজের শেষ বই 'দ্য ফাইনাল কার্টেইন'এ। সালমান হককে বেশ কষ্ট করে আনঅফিশিয়াল ভার্শন থেকে এই বই অনুবাদ করার জন্য ধন্যবাদ। আনঅফিশিয়াল হলেও অনুবাদ সাবলীল, প্রাণবন্ত; অভিযোগ করার উপায় নেই।
📚 বইয়ের নাম : দ্য রেড ফিঙ্গার
📚 লেখক : কেইগো হিগাশিনো
📚 অনুবাদ : সালমান হক
📚 বইয়ের ধরণ : ক্রাইম থ্রিলার, ডিটেকটিভ, মিস্ট্রি থ্রিলার
প্রায় এক বসায় শেষ করা হল ডিয়েকটিভ কাগা সিরিজের সপ্তম বই 'দ্য রেড ফিঙ্গার' বইটা। পুরো বইটাই ভালো লেগেছে, অন্যান্য কয়েকটি বইয়ের মতই অপরাধ করে অপরাধ ঢাকার প্রচেষ্টা এবং সে প্রচেষ্টাকে বাধা দিয়ে কাগার রহস্যো উদঘাটন। আকিও চরিত্রটা কাপুরুষ লেগেছে। যদিও টিপিকাল গল্প কিন্তু হিগাশিনোর গল্প কেন এত ভালো লাগে? কারন তার গল্প বলার ধরন+ মানুষের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ। সাধারণ একটা গল্পকে দারুণ ভাবে সবার সামনে প্রেজেন্ট করা। আগে মনে হত জাপানিজ বইগুলো স্লো হবে কিন্তু বেশ অনেকগুলো বই পড়ার পর সেই ধারণা পুরোপুরি বাদ, বেশিরভাগ বইগুলোই বেশ ফাস্ট। ডিটেকটিভ কাগার প্রফেশনের সাথে পরিবারের কিছু বিষয়ও চলে এসেছে এই বইটাতে। অনুবাদক হিসেবে ছিলেন সালমান হক, তার অনুবাদ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। হিগাশিনো এবং সালমান হকের দুর্দান্ত অনুবাদের কম্বিনেশনে বইটা বেশ ভালো লেগেছে।
বইটা নিয়ে বলতে যেয়ে কনফিউজড হয়ে যাচ্ছি। অনেক কিছু বলার আছে, আবার নেই-ও। অবশ্যই ভালো লেগেছে কিন্তু চরিত্রগুলোর পরিণতি (অধ:পতনও বলা যায়) খুবই কষ্ট লেগেছে। ইমোশনাল একটা বই অবশ্যই।
কাগা সিরিজের, এবং আমার পড়া হিগাশিনোর লেখা, দুর্বলতম বই। রহস্য নেই বললেই চলে, সেটা সম্ভবত লেখকের উদ্দেশ্যও ছিল না। অনুবাদকের সাথে এখানে আমি একমত; হিগাশিনো চেয়েছেন মানব চরিত্রের কিছু দিক নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু পাঠক হিসেবে আমার মতামত হলো, খুব একটা সুবিধার হয়নি। যেরকম বখাটে ছোকরা এবং তাকে প্রশ্রয় দেয়া মা-বাপ দেখানো হয়েছে, সেরকম চরিত্র শুধু জাপানে না, বরং সারা দুনিয়াতেই দেখা যায়, কিন্তু প্রকাশটা ওভারলি ড্রামাটিক হয়ে গেছে, অনেকটা হিন্দি সিরিয়ালের মত। (জাপানি সিরিয়ালগুলিও এরকম বাড়াবাড়ি মেলোড্রামা, বিলিভ মি! কে জানে, হিগাশিনো সিরিয়ালের কাহিনিই লিখেছেন কিনা!)। অনুবাদ বেশ ভাল, কিন্তু যেটা চোখে লাগে, লেখার ধরণ খুবই ইনফরমাল। জাপানি ভাষা বেশ ফরমাল, এমনকি হিগাশিনোর লেখার ইংরেজি অনুবাদেও সেটা উঠে আসে, হতে পারে এটা অফিসিয়াল অনুবাদ থেকে করা হয়নি বলেই এরকম হয়েছে। তারপরও, এত কষ্ট করে প্রিয় লেখকের বই অনুবাদ করার জন্য অনুবাদককে চার তারা। দুই তারাটা লেখককে দেয়া। পুনশ্চঃ ১: কাগা'র প্রথম নাম বারবারই 'কিয়োচিরো' লেখা হয়েছে, নামটা হবে 'কিয়োইচিরো'। বদন আর বদনা যেমন এক জিনিস নয়, কিয়োচিরো আর কিয়োইচিরোও এক নয়। পুনশ্চঃ ২: বইয়ের একদম শেষে কাগা'র সাথে তার বাবা'র সম্পর্কের একান্ত নিজস্ব যে ধরণটা তুলে ধরা হয়েছে, পুরো বইতে সেটাই সবচেয়ে বেশি 'জাপানিজ' চরিত্র ধারণ করে বলে মনে হয়। এরা এতটাই চাপা প্রকৃতির যে, দূরের লোকজন দূরে থাক, খুব কাছের লোকের সামনেও প্রকাশ করে না তার ভেতরে কি চলছে। আমার প্রফেসর যেমন; মাসখানেক খাটুনি দিয়ে একটা ড্রাফট লিখে নেয়ার পর নির্বিকার মুখে পুরোটা যখন কেটে দেয়, তখন যেমন ভাবি ব্যাটার মাথায় বাঁশ দিয়ে একটা বাড়ি দিই, আবার আমার বাবা মারা যাবার পর যখন পড়াশোনায় পুরোপুরি উৎসাহ হারিয়ে বসে ছিলাম, সেই একই লোক একই রকম নির্বিকার চেহারা নিয়েই বলে--তোমার বাবা চেয়েছিল তুমি এই পড়াটা শেষ করবে, কাজেই তোমার এটা শেষ করতে হবে; টেক আ ব্রেক, এন্ড কাম ব্যাক টু ফুলফিল হিজ ড্রিম। সে সময় এই লোকটাকেই আর মেলাতে পারি না।
ডিটেক্টিভ কাগা সিরিজের কাহিনী। ঘটনা ঐরকমই, মানে ঘটনা ঘটে গেছে, ঘটনাকারীও সামনে আছে, এবার তার পালিয়ে বাঁচা কিংবা ধরা পড়ার পালা। কাহিনী তেমন প্যাঁচালো না, সরলতর, মাঝের দিকে মনে হলো বোরিং লাগছে! চার সদস্যের একটা পরিবার। পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য এমন এক ঘটনা ঘটায় যাতে করে তার মা বাবা আরও একটি অপরাধ করতে বিন্দুমাত্র কুণ্ঠাবোধ করে না :/
তবে থ্রিলারের থেকে এটাকে কাগা'র জীবনী বলে বেশি মনে হলো!
In the end, we are all accountable for our actions, no matter how much we wish to blame others. ~ unknown.
'কিয়োচিরো কাগা' সিরিজের সপ্তম বই হলেও আমার পঠিত প্রথম বই ছিলো এটি... কাহিনী শুরু হয় খুব সাধারণ একটা পরিবারকে ঘিরে ( মায়েহারা পরিবার)... বাবা আকিও, মা ইয়োইকো, ঠাম্মি মাসায়ে আর ছেলে নাওমি... কিন্তু এই সাধারণ পরিবার যদি আর দশটা পরিবারের মতোই হতো তাহলে হয়তো এই গল্পই হতো না...
এক সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বাচ্চা একটা মেয়ের মৃতদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকতে দেখে আকিও, বদলে যায় সব হিসেব নিকেশ। জানতে পারে, তাদের চৌদ্দ বছর বয়সী ছেলে নাওমিই হত্যা করেছে মেয়েটাকে। সাথে সাথে পুলিশে ফোন দিতে উদ্যোত হয় আকিও, কিন্তু বেঁকে বসে তার স্ত্রী। ছেলেকে বাঁচানোর জন্যে বারবার অনুনয়-বিনয় করতে থাকে সে। এক পর্যায়ে তার কথা মেনে নিতে বাধ্য হয় আকিও। হত্যাকাণ্ডের সমস্ত আলামত লুকিয়ে ফেলতে হয়। কিন্তু তাদের জানা ছিলো না এই কেসের তদন্তভার বর্তাবে স্বয়ং কিয়োচিরো কাগার কাঁধে। আর কাগার আবির্ভাব ঘটে অনেক পরে... এসেই যেন গল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেন...
লম্বা একটা সময় রিডার্স ব্লকে থাকার পর বইটা শুরু করি, প্রথমদিকের ছোটখাটো বর্ণনাগুলি পড়তে ভালোই লাগছিলো, অতোও স্লো না... কাগার বাবা আর কাজিন মাতসুমিয়াকে দিয়ে বইটা শুরু হয়, কিছুক্ষণ পর মূল গল্পে প্রবেশ ঘটলেও কাগাকে পাওয়া যায় অনেক পরে... থ্রিলার বই হলেও এতে সামাজিক মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলিও ফুটে ওঠেছে। পরিবারের প্রতি আমাদের সবার কম বেশি দায়িত্ব থাকে কিন্তু আমরা যখন নিজেদের দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করতে না পারি তখন সেটা শুধু পরিবারের ওপর ই না দেশের সামগ্রিক ব্যবস্থার ওপর প্রভাব ফেলে। বইটা একবসাতে শেষ করা যেত, যেহেতু খুনী কে সেটা আগেই জানা ছিলো এবং কাগা কীভাবে সেটা প্রমাণ করবে সেটা জানার একটা টানটান উত্তেজনা থেকেই যেতো তবুও একবসাতে শেষ হয় নি, একটু পর পর অবাধ্য নাওমিকে আমার থাপড়াতে ইচ্ছে করতো... (কারণ যেখানে আমি মায়ের সাথে উঁচু স্বরে কথা বললেও গিল্ট ফিল করি, সেখানে তারব্যবহারটা প্রচণ্ড রাগ ধরাতো), তার মা ইয়াইকো একটা ব্যক্তিত্বশূন্য আহ্লাদী মহিলা, সন্তানকে কীভাবে মানুষ করতে হয় সেটা না জেনে লাই দিয়ে মাথায় চড়িয়ে সমাজের বোঝা বানিয়েছে আর সবচেয়ে নিকৃষ্ট দায়িত্বহীন ব্যক্তি হচ্ছে আকিকো, না সন্তানের জন্য ভালো বাবা হতে পেরেছে আর না তার বাবা মায়ের ভাল সন্তান। লাস্টের টুইস্টটা এই বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক... সব মিলিয়ে দারুন একটা বই। কিন্তু শেষের দিকে আমার একটা প্রশ্ন অবশ্য থেকে যাচ্ছিলো, 'নাওমি ঠিক কীসের জন্য খুনটা করে? কারণ সে বারবার একটা কথাই বলেছিলো, সব ওর বাবা মায়ের দোষ!' আমি হয়তো ধরতে পারি নি, ওর মূল মোটিভটা কী ছিলো...
বই : দ্য রেড ফিঙ্গার লেখক : কেইগো হিগাশিনো অনুবাদ : সালমান হক জনরা: ক্রাইম থ্রিলার পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২০৮
স্ত্রী, সন্তান এবং বয়স্ক মা'কে নিয়ে আর দশজন মাঝবয়সী পুরুষদের মতনই কাটছিল আকিও'র জীবনটা। এই বয়সে মাথায় নানারকম চিন্তা ঘুরপাক খেলেও সেগুলোকে বশ মানাতে জানে সে। কিন্তু এক সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাড়ি ফিরে বদলে গেল সব হিসেব নিকেশ। বাচ্চা একটা মেয়ের মৃতদেহ বাড়ির উঠানে পড়ে থাকতে দেখে আকিও। স্ত্রী'র মুখে শোনে তাদের চৌদ্দ বছ বয়সী ছেলেই হত্যা করেছে মেয়েটাকে। সাথে সাথে পুলিশে ফোন দিতে উদ্যোত হয় আকিও, কিন্তু বেঁকে বসে তার স্ত্রী। ছেলেকে বাঁচানোর জন্যে বারবার অনুনয়-বিনয় করতে থাকে সে। এক পর্যায়ে তার কথা মেনে নিতে বাধ্য হয় আকিও। হত্যাকাণ্ডের সমস্ত আলামত লুকিয়ে ফেলতে হয়। কিন্তু তাদের জানা ছিলনা এই কেসের তদন্তভার বর্তাবে স্বয়ং কিয়োচিরো কাগার কাঁধে। ক্ষুরধার মস্তিষ্কের এই ডিটেকটিভের নজর এড়ায় না কিছুই। ব্যস, শুরু হয়ে যায় ইদুর-বেড়াল খেলা। কাগার সাথে রহস্য উদঘাটনের পথে পাঠকেরা বুঝতে পারবেন 'দ্য রেড ফিঙ্গার' নিছক কোন রহস্য উপন্যাস নয়, এরচেয়েও ঢের বেশি কিছু। মানব মনের অন্ধকার কোণগুলো থেকে ঘুরে আসার জন্য পাঠক আপনাকে নিমন্ত্রণ।
হিগাশিনোর উপন্যাসটি ধীরগতির কিন্তু গভীরভাবে আবেগময় এবং চিন্তাশীল। কাহিনীর প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত পরিকল্পিত এবং মনোযোগ সহকারে নির্মিত। রহস্যের প্রতি পাঠককে আকৃষ্ট রাখতে লেখক তার দক্ষতা প্রমাণ করেছেন।
বই : দ্য রেড ফিঙ্গার লেখক : কেইগো হিগাশিনো অনুবাদ : সালমান হক পৃষ্ঠা সংখ্যা : ২০৮
সাদামাটা প্লট। শুরু থেকেই বুঝা যাচ্ছিল কোন পথে আগাচ্ছে গল্পটা। সেদিকেই এগিয়েছে, আহামরি টুইস্ট মেলেনি। তাছাড়া আমার কাছে মনে হয়েছে ঘটনাটা চুইঙ্গামের টেনে অযথা লম্বা করা হয়েছে। চাইলে আরো সংক্ষেপেই সেড়ে ফেলা যেত। এই গল্পকে তাই খুব ভালো বলতে পারছি না। আবার কাগার চিন্তাভাবনা ও শেষদিকের অংশগুলোর জন্য খারাপের তালিকাতে ফেলারও সুযোগ নেই।
When I finished reading Under the Midnight Sun (in English), I was left with a feeling of awe to Higashino's writing (and I've read all the other books of his in English) so I decided to try reading a book of his in Japanese - Akai Yubi (Red Fingers). It was my first time reading a legit full length published novel in Japanese so I had to spend a lot of time looking up words and I'm sure that coloured my experience of it.
By the end I had a headache from crying over it. Even though it's genre is mystery, it was extremely heavy on character development, and although the plot was decent it really just felt like a framework to express the rather dark and depressing story of the family's failure as a family, rather than the mystery plot. The main family in this story, the Maehara's, are a dysfunctional family in the way they seem to completely lack empathy for each other and are either ignoring each other or fighting without any heart at all. They became pathetic and tragic to the point making this book extremely depressing (I can't emphasize that enough, I don't think I've ever felt so depressed after finishing a book before).
The murder as well, of an innocent girl added to the dark air of the novel. A small girl, who died for really no good reason at all. The motive was good in the way that it got at the heart of what can destroy people emotionally, but it was such an unfair death, an unjustified death. Although, that wasn't the focus the book.
Because I had to focus extra hard to read it in a language which I'm still lacking in, it was extra painful at times, I just wanted it to end. It is extremely well written, but so, so dark. The patheticness of some of the characters is frustrating and depressing.
Overall it really captured the feeling of being absolutely drowned in darkness, doubt and desperation. A really rather heavy read.
আকিও নামের আপাত নিরীহ এক মধ্যবয়সী পুরুষের স্বাভাবিক জীবন কেটে যাচ্ছিলো বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং একমাত্র ছেলেকে নিয়ে। এক সন্ধ্যায় অফিসে থাকতেই জলদি ঘরে আসার জন্য ফোন দেয় তার স্ত্রী। ঘরে ফিরতেই আবিষ্কার করে বাচ্চা একটা মেয়ের লাশ। যে মেয়েকে খুন করেছে তারই একমাত্র ছেলে! লাশ লুকিয়ে ফেললেও আকিও জানে পুলিশ অবশ্যই আসবে তার ঘরে। আর তাই এখন থেকেই সে প্রস্তুতি নিতে থাকে পুলিশকে মোকাবেলার, সাজিয়ে ফেলে ভয়াবহ এক পরিকল্পনা। এদিকে এই কেসের তদন্তভার দেয়া হয়েছে স্বয়ং কিয়োচিরো কাগা কে। প্রতিটা সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জিনিসও যার চোখে ধরা পড়ে। ইঁদুর বেড়ালের এই খেলায় আকিও কি শেষ পর্যন্ত নিজের প্ল্যান ধরে রেখে আগাতে পারবে?
কতো ধরণের বইই তো আমরা পড়ি। কিন্তু হিগাশিনোর কোনো বই পড়ার অভিজ্ঞতাটাই আসলে অন্যরকম। কেমন যেনো বুকে এসে ধাক্কা দেয় তার গল্পগুলো। এই বইটাও তেমনই একটা বই।
দ্য রেড ফিঙ্গারকে ঠিক পুরোদস্তুর থ্রিলার বই বলা যায় না। এটাতে থ্রিলারের খুন, পুলিশি তদন্ত প্রক্রিয়া, সূত্র খুঁজে অপরাধী পর্যন্ত পৌছে যাওয়ার উপাদানগুলো থাকলেও, তার সাথে যুক্ত হয়েছে পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী এবং সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কের বুনট। আর যথারীতি রয়েছে কিয়েচিরো কাগার প্রখর অনুসন্ধানী দৃষ্টিভঙ্গি।
কাগাকে নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। এই গোয়েন্দা চরিত্রটা একটু অদ্ভুত আসলে। সে স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য গোয়েন্দা চরিত্রের মতো তথ্য, সূত্র এবং তদন্ত নির্ভর। আবার একই সাথে মানুষের মনের গোপন কুঠুরিতেও তার আনাগোনার ক্ষমতাটা প্রবল। এই দ��ই ক্ষেত্রেই অতি সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়ও তার নজর এড়ায় না। আর এভাবেই সে ফিজিক্যাল এভিডেন্সের পাশাপাশি, অবজারভেশনের মাধ্যমে পাওয়া মেন্টাল এভিডেন্সগুলোকে জোড়া লাগিয়ে তার কেস সমাধান করে। ম্যালিসের মতো এই বইতেও খুনী কে তা শুরু থেকেই জানা থাকে, এমনকি জানা হয়ে যায় তার মোটিভও। তবে এই বইয়ের মজাটা হলো কাগা কিভাবে খুনী এবং খুনীর রক্ষাকারীদের দূর্দান্ত প্ল্যানকে টেক্কা দিতে পারে সেটা। তাদের আপাত দৃষ্টিতে ফুল প্রুফ প্ল্যানটাও কাগা যথারীতি খুব সূক্ষ্ম একটা সূত্র থেকে বিনষ্ট করে দেয়।
ছোট এই বইটাতে মূল হত্যা রহস্যের পাশাপাশি, বেশ বড় একটা অংশ এগিয়েছে কাগার অতীত জীবন নিয়ে। ম্যালিস পড়ে কাগাকে জানার যে প্রবল ইচ্ছা জেগেছিলো তা পূরণ হয়েছে এই বইয়ের মাধ্যমে। মূল রহস্যটা যেমন বিষাদে ভরপুর, কাগার ব্যক্তিগত জীবনটাও তেমনি বিষাদময়। বইয়ের একদম শেষ পাতায় গিয়ে কাগার সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা রূপ চোখে পড়ে, যেটা কাগার প্রতি মুগ্ধতা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আর মূল রহস্য মানে আকিও এবং তার পরিবারের কাহিনীর ব্যাপারে কি বলবো?
আমাদের সমাজে বাচ্চার গায়ে ফুলের টোকাও পড়তে দিতে চায় না এমন বাবা মা এখন অহরহ চোখে পড়ে, নিজের বাচ্চার কোনো অন্যায়কে তারা দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। একই সাথে এমন স্বামীও অনেক আছে যে স্ত্রীর অন্যায় কর্মকান্ডকে একটু শক্তভাবে দমন না করে সহ্য করে যায়, এবং এক পর্যায়ে ঘরের অশান্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য পুরো পরিবারের প্রতিই উদাসীন হয়ে যায়। আর বৃদ্ধ শ্বশুর শ্বাশুড়িকে অপছন্দ করা বউদের সংখ্যা তো সীমাহীন। এই সবকিছুর মিলিত যোগফলের প্রভাব সবচেয়ে বেশী পড়ে কার উপর জানেন? ওই যে সন্তানটার উপর। মায়ের অন্যায় আদর, বাবার উদাসীনতা আর দাদীর সাথে মা বাবার খারাপ ব্যবহার নিজ চোখে দেখার পর সে সন্তান শেষ পর্যন্ত আর মানুষ থাকে না। ভালো মন্দের ফারাকটা বুঝার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলে এক সময়।
উপরের প্যারাটুকু কেনো লিখেছি তা বইটা পড়লেই বুঝতে পারবেন। তবে অতোটুকু পড়ে যদি মনে করেন যে কাহিনী বুঝে ফেলেছি তাহলে ভুল হবে, বইটা এরচেয়েও বেশী কিছুর শিক্ষা দিবে৷ ভূমিকায় অনুবাদক কেনো সবাইকে নিজের বাবা মায়ের খেয়াল রাখতে বলেছেন সেটা বুঝতে পারবেন। শুধু বাবা মা'র খেয়াল রাখা কেনো? কিভাবে সন্তান লালন পালন করা উচিত, কিভাবে সমস্যা থেকে পালিয়ে না গিয়ে পারিবারিক সমস্যাগুলোকে সামলানো উচিত, কিভাবে আদর এবং ভালোবাসার ব্যালেন্স করা উচিত তা শিখতে পারবেন। আর নয়তো এক সময় এই বইয়ের নাওমি চরিত্রটার মতোই হয়তো এক সময় আপনাদেরকে শুনতে হবে, "সব আমার বাবা- মা'র দোষ"
বইয়ের শেষে যথারীতি একটা হিগাশিনো মোচড় আছে। তবে সেই মোচড়াটা আমাকে থ্রিল দেয়নি বিন্দুমাত্র, বরংচ প্রবল দুঃখে আমার চোখে পানি চলে এসেছিলো। এই ব্যাপারটা অবশ্য বইটার শেষের দিকে বেশ কয়েকবারই ঘটেছে। আমার বাবা চলে গেছেন প্রায় বছর খানেক হতে চললো। আজ পর্যন্ত এমন একটা দিন যায়নি যেদিন আমি অপরাধবোধে ভুগিনি। আমি জানি এবং মনে প্রাণে বিশ্বাস করি আমার বাবার জন্য আমার আরো বেশীকিছু করা উচিত ছিলো। আমি করিনি বা করার সুযোগটুকুই পাইনি। এই বইটা আমার সেই দুঃখটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এবং একই সাথে আমাকে আরো গভীরভাবে মনে করিয়ে দিয়েছে যে বেঁচে থাকা আমার মায়ের প্রতি আমার কতোটা যত্নশীল হওয়া উচিত।
ব্যক্তিগত রেটিংঃ ০৮/১০ (বইটা আমার অসম্ভব প্রিয় একটা বই হয়ে থাকবে। তবে থ্রিলার হিসাবে কিছুটা সাদামাটা হওয়ায় এবং বাবা মা কিংবা পরিবারের প্রতি আমার মতো আবেগ তো আর সবার থাকে না, সেই চিন্তা করে রেটিং একটু কমিয়ে দিলাম )
অনুবাদঃ আমি সব সময় বলি আমাদের এই ছোট্র বইপাড়ায় সালমান হক একটা ব্রান্ড। উনার বইয়ের রিভিউ দেয়ার সময় আলাদা করে অনুবাদ অংশটুকু না রাখলেও চলে। উনি যদি তাড়াহুড়ো করে সবচেয়ে কম সময়েও কোনো বই অনুবাদ করে জমা দিয়ে দেন, তবুও সেটা গড়পড়তা অন্যান্য অনুবাদগুলোর তুলনায় ঢের এগিয়ে থাকবে। এই বইটাও তার ব্যতিক্রম নয়, বরংচ এই বইটা উনার অন্যান্য অনুবাদগুলোর তুলনায় একটু এগিয়ে থাকবে। কারন এই বইটার কোনো অফিসিয়াল ইংরেজি অনুবাদ নেই। আর তাই বইটা অনুবাদ করতে গিয়ে উনাকে শ্রমটুকুও একটু বেশীই দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আউটকাম যেটা এসেছে তা নিয়ে অবশ্য পাঠক হিসাবে আক্ষেপ করার তেমন জায়গা নেই৷ আমাদের দেশে কেইগো হিগাশিনোর অপর নাম যদি "সালমান হক" বলি, তাহলে সম্ভবত খুব একটা অত্যুক্তি হবে না। সালমান ভাইকে ধন্যবাদ হিগাশিনোর সাথে আমাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য, এবং চমৎকার আর দারুণ সব বই উপহার দেয়ার জন্য। আপনি আপনার এই কোয়ালিটিটা ধরে রাখুন শেষ পর্যন্ত এই দোয়া করি। আর হ্যা হিগাশিনোর আরো বেশী বেশী বই চাই আপনার হাত ধরে।
প্রোডাকশনঃ ২০৮ পেইজের পিচ্চি একটা বইয়ে এতো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির প্রোডাকশন তাও এতো কমদামে পাওয়া রীতিমতো অবিশ্বাস্য। ভারী মোটা ডাস্ট কাভার, চমৎকার পেইজ কোয়ালিটি, সুন্দর ফন্ট এবং দূর্দান্ত বাঁধাই; সবকিছুর জন্য শিরোনাম প্রকাশনকে ধন্যবাদ। প্রচ্ছদটাও হয়েছে দূর্দান্ত। ডিটেকটিভ কাগা সিরিজের বইগুলোর একই ধাঁচের প্রচ্ছদ রাখার প্ল্যানটা আমার বেশ বেশ ভালো লেগেছে। বইগুলো যখন শেলফে একসাথে রাখা হবে তখন দূর থেকেও বুঝা যাবে যে এগুলা হিগাশিনোর ডিটেকটিভ কাগা সিরিজের বই। আফসোস শুধু ম্যালিসটা নিয়ে, ওইটাও কি কোনোভাবে শিরোনাম থেকে আনা যায় একই রকমের প্রচ্ছদ আর প্রোডাকশনে? প্রকাশনীর প্রতি একটা সাজেশন অবশ্য আছে আমার। বইয়ের প্রুফিং এর দিকে একটু নজর দেয়া উচিত। এই বইটায় বেশ কিছু বানান ভুল ছিলো। যেহেতু সালমান ভাইয়ের মতো অনুবাদকের বইয়ে সম্পাদনার কোনো প্রয়োজন নেই, তাই একটু সময় নিয়ে প্রয়োজনে বই প্রকাশের ডেডলাইন সপ্তাহ খানেক পিছিয়ে দিয়ে হলেও শুধুমাত্র বানানগুলো ঠিকঠাক করে বই বের করলে ভালো হবে।
পুনশ্চঃ বইয়ের কাহিনী সংক্ষেপ পড়লে অনেকের মালায়ালাম কিংবা বলিউডের সাড়া জাগানো মুভি 'দৃশ্যম' এর কথা মনে পড়তে পারে। আমারও তেমনটাই মনে হয়েছিলো। তবে এই বইটার সাথে ওই সামান্য কাহিনী সংক্ষেপ ছাড়া দৃশ্যত দৃশ্যমের সাথে আর কোনো মিল নেই।