১৯৭১ সালের মে মাস। অবরুদ্ধ ঢাকায় ভীষণ নিস্তব্ধ রাতের বুক চিরে ছুটছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ির বহর। তীব্র হতাশা, তীব্র ভয়ে কাঁপছে বাংলাদেশের মানুষ। অবরুদ্ধ ঢাকার একটি পরিবারের কর্তা মতিন সাহেব ট্রানজিস্টার শোনার চেষ্টা করছেন মৃদু ভলিউমে। ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শোনার চেষ্টা করছেন। নব ঘোরাচ্ছেন ট্রানজিস্টারের। হঠাৎ শুনতে পেলেন বজ্রকণ্ঠের অংশ বিশেষ : ‘মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি / রক্ত আরও দিবঃ / এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম / এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম।মতিন সাহেবের পরিবারে কয়েকদিন পর হাজির হন উনার বন্ধুর ছেলে বদি। বদি এবং তার সাথের মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক অভিযান করে সফলতা লাভ করে। কিন্তু এক এক করে তারা পাক বাহিনী র হাতে বন্ধী হয়। ধরা পড়েও গেরিলাযোদ্ধা রাশেদুল করিম। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় থু থু ছিটিয়েছেন পাকিস্তানী মেজরের মুখে। হাতের আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে তাঁর। মাথা নোয়াননি। অবশেষে বদি গুলি খান। তাকে সারানোর মত ডাক্তার ঔষধের এর জন্য সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু তিনি কি পারবেন সকাল পর্যন্ত বাচতে? তিনি কি আরেকটি সূর্যালোক দেখতে পাবেন? এভাবেই শেস হয় কাহিনী।
Humayun Ahmed (Bengali: হুমায়ূন আহমেদ; 13 November 1948 – 19 July 2012) was a Bangladeshi author, dramatist, screenwriter, playwright and filmmaker. He was the most famous and popular author, dramatist and filmmaker ever to grace the cultural world of Bangladesh since its independence in 1971. Dawn referred to him as the cultural legend of Bangladesh. Humayun started his journey to reach fame with the publication of his novel Nondito Noroke (In Blissful Hell) in 1972, which remains one of his most famous works. He wrote over 250 fiction and non-fiction books, all of which were bestsellers in Bangladesh, most of them were number one bestsellers of their respective years by a wide margin. In recognition to the works of Humayun, Times of India wrote, "Humayun was a custodian of the Bangladeshi literary culture whose contribution single-handedly shifted the capital of Bengali literature from Kolkata to Dhaka without any war or revolution." Ahmed's writing style was characterized as "Magic Realism." Sunil Gangopadhyay described him as the most popular writer in the Bengali language for a century and according to him, Ahmed was even more popular than Sarat Chandra Chattopadhyay. Ahmed's books have been the top sellers at the Ekushey Book Fair during every years of the 1990s and 2000s.
Early life: Humayun Ahmed was born in Mohongonj, Netrokona, but his village home is Kutubpur, Mymensingh, Bangladesh (then East Pakistan). His father, Faizur Rahman Ahmed, a police officer and writer, was killed by Pakistani military during the liberation war of Bangladesh in 1971, and his mother is Ayesha Foyez. Humayun's younger brother, Muhammed Zafar Iqbal, a university professor, is also a very popular author of mostly science fiction genre and Children's Literature. Another brother, Ahsan Habib, the editor of Unmad, a cartoon magazine, and one of the most famous Cartoonist in the country.
Education and Early Career: Ahmed went to schools in Sylhet, Comilla, Chittagong, Dinajpur and Bogra as his father lived in different places upon official assignment. Ahmed passed SSC exam from Bogra Zilla School in 1965. He stood second in the merit list in Rajshahi Education Board. He passed HSC exam from Dhaka College in 1967. He studied Chemistry in Dhaka University and earned BSc (Honors) and MSc with First Class distinction.
Upon graduation Ahmed joined Bangladesh Agricultural University as a lecturer. After six months he joined Dhaka University as a faculty of the Department of Chemistry. Later he attended North Dakota State University for his PhD studies. He grew his interest in Polymer Chemistry and earned his PhD in that subject. He returned to Bangladesh and resumed his teaching career in Dhaka University. In mid 1990s he left the faculty job to devote all his time to writing, playwright and film production.
Marriages and Personal Life: In 1973, Humayun Ahmed married Gultekin. They had three daughters — Nova, Sheela, Bipasha and one son — Nuhash. In 2003 Humayun divorced Gultekin and married Meher Afroj Shaon in 2005. From the second marriage he had two sons — Nishad and Ninit.
Death: In 2011 Ahmed had been diagnosed with colorectal cancer. He died on 19 July 2012 at 11.20 PM BST at Bellevue Hospital in New York City. He was buried in Nuhash Palli, his farm house.
শুরুটা যতো চাঞ্চল্যকর শেষটা ততোটাই গম্ভীর। বইটির মধ্যে দুঃখ বেদনা, অনুভূতিগুলো খুব সহজে উপলব্ধি করা যায়। অনুভূতির নামে কোথাও নেকামোর প্রকাশ ঘটেনি। সহজেই গল্পের মাঝে হারিয়ে যাওয়া যায়। কখনো আলমকে খুব অসাধারণ মনে হবে না। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের একজন যুবকে যেমন হওয়ার কথা সে তেমনি।
জুলাই মাসের ছয় তারিখ। ঢাকায় একটি গেরিলা বাহিনী ঢুকেছে। যার নেতৃত্বে আছে বদিউল আলম নামের ছেলেটি। দেখতে রোগা আর ছোটখাটো। শহরে আত্মীয়-স্বজন থাকলেও নিজের নিরাপত্তা এবং আত্মীয়পরিজনদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না। মতিন সাহেব নামের এক ভদ্রলোকের বাসায় এক সপ্তাহের জন্য থাকে বদিউল আলম। মতিন সাহেবের পরিবারে তেমন কেউ নেই। স্ত্রী সুরমা আর দুই মেয়ে রাত্রি, অপালা এবং কাজের মেয়ে বিন্তি। রাত্রি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ফিজিক্সে পড়াশোনা করে। আর অপালা ক্লাস এইটে পড়ে। রাত্রি চুপচাপ স্বভাবের হলেও অপালা ভীষণ ছটফটে। সম্পূর্ণই বিপরীত।আর কাজের মেয়ে বিন্তি কোন কাজ আগ্রহ নিয়ে না করলেও বাড়ির গেট খোলার কাজ সে মহা আগ্রহ নিয়ে করে।বদিউল এ বাসায় উঠার পর সুরমা প্রথম একটু আপত্তি করেছিল তার থাকার ব্যাপারে। কারণ বাসায় দুজন মেয়ে আছে। তাদের নিরাপত্তার কারণেই তার আপত্তি ছিল। কিন্তু বদিউলেরর দূর্বিনীত রুপের কাছে হার মেনে যায় সুরমা।এই বদিউল ছেলেটাকেই এক সময় সুরমা ভীষণ পচ্ছন্দ করে ফেলে। এমনকি এ বাসার বড় মেয়ে রাত্রির মনেও বদিউল নামের ছেলেটি কখন যেন একটু জায়গা করে নেয়।
এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকায় মোটামুটি বড়সড় দুইটি অপারেশনের দায়িত্ব নিয়ে আসে বদিউলরা। প্রথম অপারেশনে সাকসেসফুল হয়। দ্বিতীয় অপারেশন শেষ করেই তার এ বাসা ছেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সব উলটপালট হয়ে যায় সেদিন। কি হয় সেদিন? রাত্রি কি তার মনের কথা জানাতে পারে বদিউলকে??
শেষটা ছিল কষ্টের তার থেকেও কষ্টের হল উপন্যাসের শেষ হয়ে যাওয়া।
আলম লিখল- 'ভালো আছি মা'। তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে লিখল, ' শিগগিরই তোমাকে দেখতে আসব'। দ্বিতীয় লাইনটি লিখে তার একটু খারাপ লাগতে লাগল। 'শিগগিরই তোমাকে দেখতে আসব' এই লাইনটিতে কোথায় যেন একটু বিষাদের ভাব আছে। দেখতে আসা হবে না এই কথাটি যেন এর মধ্যে লুকানো।
হুমায়ূন আহমেদের লেখা নাকি সস্তা। উনি বাজারি লেখক এমন কথা অনেক উচ্চমার্গিয় পাঠকের নিকট থেকে মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। তারা পড়ে দেখবেন এই বইটা।
অনেক কিছু লিখতে মন চাইলো। কিন্তু জ্বরের জন্য লিখতে আলসেমি লাগছে। জানি না এই বই নিয়ে আর কখনো কিছু লিখব কী না। কিছু মনের ভাব না হয় আপাতত অপ্রকাশিতই থাক।
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই পড়তে গেলে কেমন যেন আতঙ্ক কাজ করে। দেখা যাবে যে চরিত্রকে ভাল লাগতেছে তাকে কেউ উঠিয়ে নিয়ে গেল কিংবা গুলিতে মারা পড়লো। তাছাড়া দেখা যাবে অনেক হামলা-হাঙ্গামা আর দুঃখ-কষ্টের ব্যাপার। এজন্য এই প্লটের বই ইদানীং এড়িয়ে চলতে ইচ্ছা করে, বিশেষ করে রাইফেল, রোটি, আওরাত পড়ার পর থেকে। হুমায়ূন আহমেদের বই পড়ার ক্ষেত্রে ইদানীং একটা সিরিয়াল মেইনটেইন করার চেষ্টা করছি। সেই সুবাদে আগুনের পরশমণি পড়তেই হল।
সময়- ১৯৭১ , ঢাকায় এক গেরিলা আক্রমণ নিয়ে কাহিনী। মতিন সাহেবের বাড়িতে বদরুল আলম নামের এক তরুণের আগমন ঘটলো, সে মূলত মুক্তিযোদ্ধাদের একটা টিমের লিডার। গেরিলা আক্রমণ করতেই ওদের দলটা ঢাকায় এসেছে। মতিন সাহেবের স্ত্রী অবশ্য শুরুর দিকে আলমের এ বাড়িতে থাকায় খুব একটা খুশি হতে পারেন নি, কারণ বাড়িতে হাইস্কুল-ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া দুটি মেয়ে আছে। পরে অবশ্য আলমের খাতির যত্নের ত্রুটি রাখতে চান নি। ওদের ১ম অপারেশন সফল হয়। কিন্তু ২য় অপারেশনের সময় গন্ডগোল লেগে যায়।
ক'দিন আগে ১৯৭১ নামের একটা বই পড়েছি, খুব একটা ভাল লাগে নি। কিন্তু এই বইতে নামের জন্যেই তো ৫ তারা দিয়ে দিতে ইচ্ছা করে। আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে...
★ রাত্রি ফিসফিস করে বলল, 'জোনাকিগুলোকে আর দেখা যাচ্ছে না কেন মা?' জোনাকি দেখা যাচ্ছে না, কারণ ভোর হচ্ছে। আকাশ ফর্সা হতে শুরু করছে। গাছে গাছে পাখ পাখালী ডানা ঝাপটাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই। ★ খোলা জানালার পাশে রাত্রি দাঁড়িয়ে আছে। হাওয়ায় তার চুল উড়ছে। আহ, কী সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটাকে! বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। কত অপূর্ব সব দৃশ্য চারদিকে। মন দিয়ে আমরা কখনো তা দেখি না। যখন সময় শেষ হয়ে যায় তখনি শুধু হাহাকার হৃদয় পূর্ণ হয়। ★
বইটা পড়তে পড়তে বারবার মনে হচ্ছিলো এই রাত্রি নামের মেয়েটা বোধহয় আমি নিজেই! বইটা শেষ করার পর কি একটা শূন্যতা কাজ করে ভিতরে যা কাউকে বলে বুঝানোর না।
“জোনাকি দেখা যাচ্ছে না। কারণ ভোর হচ্ছে। আকাশ ফর্সা হতে শুরু করছে। গাছে গাছে পাখপাখালি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই।” . সিনেমাটা অনেক বছর আগে দেখেছিলাম। সে সূত্রে প্লট জানাই ছিল। তারপরও বইটা পড়তে ভালোই লাগছিলো। মুক্তিযুদ্ধে এক ঝাঁক তরুণ গেরিলাদের অপারেশন তুলে ধরা হয়েছে।
আহ্ মুক্তিযুদ্ধ! মুক্তির জন্য যুদ্ধ!! ১৯৭১ সাল মে মাসে, ঢাকায় গেরিলা আক্রমণকে কেন্দ্র করে, চিরাচরিত হুমায়ূন, নিজের মতো করে হাস্যরস, রোমান্টিসিজম, এবং রোমাঞ্চতা দিয়েই গড়া একটি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই। লেখকের সৃষ্ট উপন্যাসের নায়িকাগুলো সবসময়ই সুন্দর, সাবলীল, এবং মন ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এ উপন্যাসের 'রাত্রি' চরিত্রটিও ভিন্ন নয়, প্রেমে পড়তে যেকেউ বাধ্য! "বেঁচে থাকার মত আনন্দ আর কিছুই নেই" মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস পড়তে গেলে, সবসময় একধরনের ভীতি কাজ করে, কিছুক্ষণ পর পর গায়ে শিহরণ দিয়ে উঠে শুধু। নিজের ভীতু মনে প্রশ্ন জাগে, 'এত সাহসী কেমনে ছিল ওঁরা?'
এর আগে, জাহানারা ইমামের 'একাত্তরের দিনগুলি' পড়ে, গায়ে ঠিক এভাবেই শিহরণ দিয়ে উঠে ছিল।
'বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুই নেই' - এরচে সহজ সুন্দর সত্য এ পৃথিবীতে খুব কমই আছে।যারা মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখেছে তারাই জানে বেঁচে থাকার আনন্দ কতটুকু...
'আগুনের পরশমণি' হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত উপন্যাস এবং চলচ্চিত্র।এতেও হুমায়ূনীয় 'মায়াবতী' নারী চরিত্র আছে,যে আবার মাঝে মাঝেই অনেক কিছু আগে থেকেই বুঝে ফেলে এবং প্রচন্ড আবেগী।এই হুমায়ূনীয় একঘেয়েমির জন্যে এক তারা কর্তন।
এই গল্পের মিলিটারি চরিত্র মেজর রাকিব আবার খুবই নম্র-ভদ্র এবং হিউমার সচেতন।সে ধরে আনা মুক্তিযোদ্ধাকে কফি খাওয়ায়,সিগারেট এনে দেয়ার অফার দেয়,গোশত-পরোটা খাওয়ায়,গল্পের ছলে ইন্টারোগেশন করে।এই বিরক্তিকর পর্বটির জন্যে আরও এক তারা কর্তন।
হুমায়ূন আহমেদের গল্প-উপন্যাসে রাজাকার-মিলিটারিদের মানবিক করে দেখানোর সমালোচনা আগে শুনেছি।এবার তার চাক্ষুষ প্রমাণ পেলাম।
খুব ছোট্ট একটা বই। এর আগে সিনেমাটা দেখেছি, কিন্তু বই পড়া হয় নি। তাই এবার বইটা নিয়ে বসলাম। ভীষণ মন খারাপ হচ্ছে। এর বেশি কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে না। যদি সেই সময়ে জন্ম নিতাম, আমি কি আলমের মত হতে পারতাম? দেশকে ঠিক কতটা ভালোবাসলে নিজের জীবন বাজি রাখা যায়? আমি কি ততটা ভালোবাসতাম?
রাত্রি জানালা বন্ধ করবার জন্য এগিয়ে যেতেই আলম বলল, বন্ধ করবেন না। প্লিজ বন্ধ করবেন না। সে পাশ ফিরতে চেষ্টা করতেই তীব্র ব্যথায় সমস্ত চেতনা আচ্ছন্ন হয়ে গেল। মাকে ডাকতে ইচ্ছা করছে। ব্যথার সময় মা মা চিৎকার করলেই ব্যথা কমে যায়। এটা কি সত্য, না এটা সুন্দর একটা কল্পনা? খোলা জানালার পাশে রাত্রি দাঁড়িয়ে আছে। হাওয়ায় তার চুল উড়ছে। আহ, কী সুন্দর দেখাচ্ছে মেয়েটাকে! বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কিছুই নেই। কত অপূর্ব সব দৃশ্য চারদিকে। মন দিয়ে আমরা কখনো তা দেখি না। যখন সময় শেষ হয়ে যায় তখনি শুধু হাহাকার হৃদয় পূর্ণ হয়। রাত্রি কী যেন বলছে। কী বলছে সে? আলম তার ইন্দ্রিয়গুলি সজাগ করতে চেষ্টা করল।
১---"অনেক মানুষ হয়তো অনেক কিছু না জেনেই বড় হয়" ২---"বেঁচে থাকার মতো আনন্দ আর কোনো কিছুতেই নেই" ৩---শেষের অংশে সুরমা ভদ্রমহিলার রাত্রিকে দেয়া কথাটি,
সুরমা কোমল গলায় বললেন, "দেশ স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর আমি আলমের মাকে গিয়ে বলব- চরম দুঃসময়ে আমরা আপনার ছেলের কাছে ছিলাম। তার উপর আমাদের দাবি আছে। এই ছেলেটিকে আপনি আমায় দিয়ে দিন।"
এই তিনটি কথা আমার মনে গেথে গিয়েছে ॥ এর জন্য আমি এই বইটিকে উপহার দিলাম ৫/৫....💖
সহজ সাবলীল হুমায়ূনের চিরাচরিত ঢঙে লেখা। মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাসের তো অভাব নেই। একেকজন একেক ঘটনাকে কেন্দ্র করে গল্প ফেঁদেছেন। কেউ সমগ্র মুক্তিযুদ্ধতে ফিকশনের আঁচড় বসিয়েছে।খোদ হুমায়ূন আহমেদের "জোছনা ও জননীর গল্প " পড়লেই তা সহজে অনুমেয়। তবে আগুনের পরশমণি ঢাকায় শুধুমাত্র গেরিলা আক্রমণ নিয়ে লেখা।মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ধাক্কায় মুক্তিসেনাদের সংগঠিত ও ট্রেনিং এর কাজে উল্লেখযোগ্য সময় চলে যায়। কিন্তু ততদিনেও পাক বাহিনীর অত্যাচার বাড়ে বৈ কমেনি।পাকিস্তান ও তখন বহির্বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ অবস্থা দেখাতে ব্যস্ত।সুতরাং এরকম একটা মুহুর্তে দরকার বিশ্ববাসীকে জানান দেয়া যে অবস্থা সেরকম না যেরকম সরকার দেখাচ্ছে। বিশ্ববাসীকে দেয়া এই বার্তা উপন্যাসের মতিন চরিত্রের বয়ানে আজদহা নেমে আসার মতন কিংবা মনে মনে মুক্তিযুদ্ধকে সাপোর্ট করলেও শরীফ সাহবের বয়ানে তা হয়ে উঠে কম বয়েসি ছেলেদের রোমান্টিসিজম। আগুনের পরশমণি পড়তে গিয়ে বারবার আমার ভাবনার দুয়ারে ধাক্কা লেগেছে এই ভেবে যে মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার মতো ভেতো ও ভীতু বাঙালী কিংবা আমার এই প্রজন্ম থাকলে কতটা সাহসের পরিচয় দিতো! বারবার আশফাকের চরিত্রে নিজেকে কল্পনা করছিলাম আর কিন্তু প্রথম আঙুল ভাঙার ব্যথাতেই আমার চেতনায় ফিরে আসতে হয়েছে।নিজেকে মেকি সান্ত্বনা দিতে হয়েছে After all it's a fiction man! বিড়বিড় করে! আসলেই তারা জাতীর সূর্য সন্তান।হুমায়ূন সেই বীরদের বীরত্বগাঁথা খানিক বলার চেষ্টা করেছেন। অল্পবিস্তরে বলে মনে হয় হুমায়ূন সফল হয়েছেন।
অনেকেই বলে, 'জোসনা ও জননীর গল্প' মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা হুমায়ূন স্যারের বেস্ট উপন্যাস। কিন্তু ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে আ���ুনের পরশমণিই বেশি ভাল লাগে... বইটা অবলম্বনে তৈরি মুভিটাও ভাল ছিল। সর্বকালের সেরা বাংলা চলচিত্রগুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকায় অবশ্যই থাকবে।
মুক্তিযুদ্ধের ভাল একটি উপন্যাস। শুরুটা তেমন ভাল না লাগলে শেষটা ছিল অসাধারণ ❤ "জোনাকি দেখা যাচ্ছে না। কারণ ভোর হচ্ছে। আকাশ ফর্সা হতে শুরু করছে। গাছে গাছে পাখপাখালি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই।" 😔
রাত্রি ফিসফিস করে বললো, 'জোনাকিগুলো আর দেখা যাচ্ছে না কেন মা?' জোনাকি দেখা যাচ্ছে না, কারণ ভোর হচ্ছে। আকাশ ভোর হতে শুরু করেছে। গাছে গাছে পাখপাখালি ডানা ঝাপটাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই।
পড়ে মনে বিষাদ জাগে—আলমকেও কেন যেন জোনাকিদের একজন মনে হয়।
"জোনাকি দেখা যাচ্ছে, কারন ভোর হচ্ছে। আকাশ ফর্সা হতে শুরু করেছে। গাছে-গাছে পাখপাখালি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই"
দিনের আলোতে জোনাকিদের প্রয়োজন না থাকলেও, রাতের অন্ধকারে তাদের মৃদু আলোর সৌরভ যেমন থেকেই যায়, স্বাধীনতার পরতে পরতেও তেমনি শহিদের রক্তের গন্ধ মিশে থাকে। যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা বইগুলো আমার বেশ ভালো লাগে। একাত্তরের যুদ্ধের ছোট্ট একটা খন্ডচিত্র উঠে এসেছে আগুনের পরশমণি-তে।
শুরুতেই দেখা যায় একজন গড়পড়তা মধ্যবয়স্ক এবং ভীতু মানুষের যার সাথে আর যাই হোক না কেন যুদ্ধের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে না। তিনি তার বাড়িতে আশ্রয় দেন একজন গেরিলা যোদ্ধাকে। যুদ্ধে তো সাহসী মানুষেরাই যায়। তবে তাদেরও মানবিক দিক আছে। তারাও আতংকিত হয়, ভয় পায়। যুদ্ধের ন্যারেটিভ গুলোতে এসব বিষয়গুলো মোটেও পাত্তা পায় না। তবে হুমায়ুন আহমেদ-এর বই বরাবরের মতোই মানবিক এবং প্রানবন্ত। তিনি গল্পের মধ্যে প্রানের সঞ্চার করতে পারেন। যুদ্ধ নিয়ে বই বলে এখানে শুধু মার-মার কাট-কাট, সেসব ভাবলে ভুল হবে। উল্টো যুদ্ধক্ষেত্রের সিন দুই-তিনটা। তারচেয়ে বরং সেসময়কার আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলোর ওপর বেশি ফোকাস করা হয়েছে। কিছু কিছু বই আছে যেগুলো নিয়ে অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে, কিন্তু বলার সময় শব্দ আটকে যায়, এবং দেখা যায়, কোন কিছুই আর বলা হয় না। এটা সেরকম একটা বই। তবে যারা বলেন হুমায়ুন আহমেদ সস্তা লেখক, তার লেখায় গভীরতা নেই, তারা এই বইটা পড়ে দেখতে পারেন। হুমায়ুন আহমেদ এর সবচেয়ে বড় সফলতা হলো তিনি যা বোঝাতে চান, পাঠকদের তা বোঝাতে পারেন। তার লেখা সাবলীল বলেই যে তা গভীর নয়, সে-কথা আগুনের পরশমণি-তে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
"আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে, এ জীবন পূণ্য কর দহন-দানে।।"
সেদিন দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে ভাবলাম একটু ঘুমিয়ে নিই। বাইরে তখন ঝড় উঠছে। আকাশ ঘন কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। তা ঘুমানোর আগে ভাবলাম কয়েক পৃষ্ঠা বই পড়ি। হুমায়ূন আহমেদের ' আগুনের পরশমণি ' বের করে নিলাম। পড়তে পড়তে এক পর্যায়ে ঘর অন্ধকার হয়ে গেছে। বাতি জ্বালিয়ে চলে গেলাম অন্য ঘরে। পুরোটা শেষ করে যখন উঠলাম, তখন ঘুম আমার লাটে উঠেছে, চোখ ভিজে ভিজে উঠছে, বাইরে পুরোপুরি ঝড় শুরু হয়ে গেছে! এবার গল্পে আসি। সময়টা ১৯৭১ সাল। গেরিলা অপারেশনে অংশ নিতে মতিন সাহেবের বাসায় ওঠে মুক্তিযোদ্ধা বদি। মতিন সাহেবের দুই মেয়ে রাত্রি আর অপালা। মতিন সাহেবের স্ত্রী প্রথমে বদির ব্যাপারে আপত্তি করলেও পরে সবটা মেনে নেন। নির্ধারিত দিনে সহযোদ্ধাদের সাথে অপারেশনে বের হয় বদি। অপারেশন সফল হলেও- আর বলব না! গল্পটা ছোট, তাই ডিটেইল বলতে গেলে প্রায় সবটাই বলে দেওয়া হবে। অন্তত আমার ক্ষেত্রে তাই। অতএব, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পড়ে ফেলুন। মুভিও আছে ' আগুনের পরশমণি ' নামেই! দেখেছেন কি?
"রাত্রি ফিসফিস করে বলল,জোনাকিগুলিকে আর দেখা যাচ্ছে না কেন মা? জোনাকি দেখা যাচ্ছে না কারণ ভোর হচ্ছে।আকাশ ফর্সা হতে শুরু করেছে। গাছে গাছে পাখ- পাখালি ডানা ঝাপ্টাচ্ছে। জোনাকিদের এখন আর প্রয়োজন নেই।" গল্পটা উনিশশো একাত্তর সনের,গল্পটা ঢাকা শহরের। পাক হানাদার বাহিনীর কঠিন মুঠির ভেতরে একটি অসহায় শহর।শহরের অসহায় মানুষ। চারিদিকে সীমাহীন অন্ধকার। দীর্ঘ দিবস এবং দীর্ঘ রজনী। গল্পটা সেই সময়ের একটা পরিবারের গল্প,গল্পটি কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার (আর ব্যাখা করে বলতে গেলে গল্পটি মুক্তিযোদ্ধা বদিউল আলমের) মতিন সাহেবের বাড়িতে আশ্রয় নেয় আলম, উদ্দেশ্যে ঢাকার বুকে গেরিলা অপারেশন চালানো।পরিবারে দুটো বড় মেয়ে থাকা সত্ত্বেও তাকে আশ্রয় দেন মতিন সাহেব। আচমকা গেরিলা অপারেশন চালিয়ে হানাদারদের হতবিহ্বল করে ফেলে আলম ও তার দল। এ যেন সাক্ষাৎ " আজদহা!!!" সেই বদিউল আলমই আবার পেট্রোল পাম্প উড়িয়ে দিয়ে ফিরে যাওয়ার পথে গুলিবিদ্ধ হয়!!! সুরমার অপত্যস্নেহ, রাত্রির আবেগ সব মিলিয়ে এক অন্যরকম মাধুর্য দান করেছে উপন্যাসটিতে। মূলত এখানে মুক্তিযুদ্ধের একটি খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে, বইটি অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র ও আছে। আর হুমায়ুন আহমেদ স্যারের অন্যান্য উপন্যাসের মতো আলাদা একটা স্নিগ্ধতা আছে এই উপন্যাসেও একটানে শেষ করার মতো একটা বই, বইটি ধরলে সময় যে কিভাবে চলে যাবে টেরও পাওয়া যায় না। বইটি কখনো আপনাকে ভাবাবে, কখনো আপনাকে কাদাবে আবার কখনো আপনার মনে দেশের প্রতি একটি আলাদা মমত্ববোধ জাগাবে #happyreading
- আর আসবেন না আমাদের এখানে? - আসব না কেন, আসব। - আমার মনে হচ্ছে আপনি আর আসবেন না। - এ রকম মনে হচ্ছে কেন? - কেউ কথা রাখে না। . মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো বই পড়তে গেলে আগে থেকেই ভেবে রাখি, পছন্দের চরিত্রগুলোকে মেরে ফেলা হবে। তবে, এখানে তোহ রহস্য রেখে গেলেন লেখক! সুরমা চরিত্রটা ভালো লেগেছে। অসম্ভব রকমের! ভালো কথা, আলম ভাই নিশ্চয় কথা রেখেছেন তাই না?
I did not even know that we need to give reviews! I liked the novel, the way it was described-Humayun Ahmed is already a phenomenon in the country and he's done his job perfectly in the novel. Some sort of crying and happiness at the same time-that's kind of feeling you're gonna get, I can say.